শুকিয়েছে পাট গাছ। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন ভারী বৃষ্টি নেই। অনেক পুকুর, নদীতেই জল কমেছে। জলের অভাবে পাট পচানোর জায়গা নিয়ে চিন্তিত জেলার বহু চাষি।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে জেলায় ৯,৪৪৪ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। ভাল দাম মেলায় এ বছরে পাট চাষের এলাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯,৬৩০ হেক্টর। এর মধ্যে কালনা মহকুমার পাঁচটি ব্লকে পাট চাষ হয়েছে ৮,৫৮৫ হেক্টর জমিতে। কালনার সব থেকে বেশি পাট চাষ হয় পূর্বস্থলী ২ ব্লকে। কৃষি-কর্তাদের দাবি, এ বার ওই ব্লকে পাট চাষ হয়েছে ৪,০৭৫ হেক্টর জমিতে। চাষিরা জানিয়েছেন, শুরুতে তাপমাত্রা বেশি থাকা এবং দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হলেও পাট গাছের বৃদ্ধি ভাল হয়েছে। জুনের শেষ থেকে শুরু হবে পাট কাটার কাজ। অনেকেই পাট তুলে ফেলার পরে, ওই জমিতে আমন ধান চাষ করেন। কিন্তু পাট গাছ কাটার সময় কাছে এসে গেলেও, জলাশয়গুলির হাল ভাবাচ্ছে চাষিদের। তাঁদের দাবি, বেশ কিছু জলাশয় শুকিয়ে গিয়েছে। কোথাও অল্প জলে কচুরিপানা ভর্তি। ভারী বৃষ্টি না হলে কচুরিপানা জমেই থাকবে, দাবি চাষিদের।
পূর্বস্থলী ২ ব্লকের এক চাষি মোরশেদ শেখ বলেন, ‘‘পাট গাছ কেটে বোঝা বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় কাছাকাছি জলাশয়ে। সেখানে বেশ কিছু দিন জলে পাটের বোঝা পচাতে হয়। এর পরে, পাট গাছের শরীর থেকে তন্তু ছাড়ানো যায়। এ বার জলাশয়গুলিতে জল এতটায় কম যে কী ভাবে পাট গাছ পচানো যাবে, ভাবছি।’’ কালনার পাট চাষি সিরাজ মণ্ডলও বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে মেঘ দেখা দিচ্ছে। তবে বৃষ্টি হচ্ছে ছিটেফোঁটা। শুক্রবার বিকেলেও কিছুটা বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু টানা কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি না হলে পুকুরের জল বাড়বে না।’’
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ মাসে এখনও পর্যন্ত তিন দিনে প্রায় ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি মিলেছে। তবে টানা কিছু দিন ধরে শুকনো আবহাওয়া চলায় জলাশয়ে জল কমেছে। ওই দফতরের এক সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘কিছু কিছু জায়গায় পাট পচানোর জলের অভাব রয়েছে। আশা করছি, কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হলেই সমস্যা মিটে যাবে।’’
কৃষি-কর্তাদের পরামর্শ, অল্প জলেও পাট পচানো সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ‘জুট রিবনার’ যন্ত্রের মাধ্যমে গাছ থেকে সবুজ আঁশ ছাড়িয়ে ফেলতে হবে। এর পরে, স্বল্প এলাকায় খাল কেটে তার উপরে পলিথিনের চাদর বিছিয়ে ওই আঁশ পচাতে হবে। এতে পাট গাছের তন্তুর মানও ভাল হয়, দাবি তাঁদের। আবার গাছ কাটার পরে, ভারী বৃষ্টি হলে জমিতেও পাট রেখে পচানো যাবে এই পদ্ধতিতে। বাঁচবে জলাশয় পর্যন্ত পাট বয়ে আনার খরচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy