পুড়ে গিয়েছে বাড়ির নানা বৈদ্যুতিন জিনিসপত্রও। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির ছাদে উঠে দীপাবলির আলো লাগাতে গিয়ে উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের তারে তড়িদাহত হয়ে জখম হলেন এক বৃদ্ধ। রবিবার দুপুরে দুর্গাপুরের আড়রা মোড়ের বিধান পার্ক এলাকার ঘটনা। জখম, বছর ৬৫-র নন্দলাল পালকে প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে শোভাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকা দিয়ে গিয়েছে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ভোল্টের উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের তার। জাতীয় গ্রিড থেকে এসে তা ঢুকেছে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের সাব-স্টেশনে। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আইনি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অনেকেই তারের নীচে বাড়ি তৈরি করেছেন। অভিযোগ, নন্দলালবাবুর বাড়িটি তেমনই একটি। আগে বাড়িটি এক তলা ছিল। তাতে বিপদের সম্ভাবনা কম ছিল। কিন্তু কিছু দিন আগে বাড়িটি দোতলা করা হয়। ফলে উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের লাইন আরও কাছে এসে গিয়েছে বাড়িটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীপাবলি উপলক্ষে এ দিন দুপুরে নন্দলালবাবু বছর দুয়েকের নাতি রাজবীরকে কোলে নিয়ে ছাদে আলো লাগাতে যান। কিছুক্ষণ পরে বিকট আওয়াজ শোনা যায়। এক তলায় পুত্রবধূ রীতাদেবী দেখেন, বাড়ির টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর-সহ যাবতীয় বৈদ্যুতিন জিনিসপত্র পুড়ে ধোঁয়ায় ঘর ভরে গিয়েছে। নন্দলালবাবুর গায়ের জামাকাপড় ও শরীরের একাংশ পুড়ে যায়। সেই অবস্থাতেই নাতিকে কোলে নিয়ে তিনি দোতলা থেকে নীচে নেমে আসেন তিনি। নন্দলালবাবু পুত্রবধূকে জানান, ছাদের উপরের অংশে দীপাবলির জন্য রকমারি আলো লাগাতে গিয়ে সেটির তার হাত ফসকে উচ্চ পরিবাহী তার ছুঁয়ে যায় এবং নীচের ২২০ ভোল্টের সার্ভিস লাইনে সংস্পর্শে আসে। তখনই শর্ট সার্কিট হয়। সার্ভিস লাইন থেকে তাঁর বাড়িতে আসা সংযোগের তার জ্বলে নীচে পড়ে যায়। তিনি তড়িদাহত হয়ে ছিটকে পড়েন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাঁর গায়ের জামা, লুঙ্গি পুড়ে যায়। মাথা থেকে শরীরের সামনের অংশ ঝলসে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দমকলের একটি ইঞ্জিন আসে। তবে তা
কাজে লাগেনি।
ছেলে, মেয়ে, পূত্রবধূ ও বছর দুয়েকের নাতিকে নিয়ে ওই বাড়িতে থাকেন মুচিপাড়ার কাছে মোটরবাইক সারাইয়ের দোকানের মালিক নন্দলালবাবু। পাড়ার বাসিন্দাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, এক তলা বাড়ি দোতলা করার সময় তাঁরা নিষেধ করেছিলেন নন্দলালবাবুকে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ওই এলাকায় বাড়ি তৈরির অনুমোদন কী ভাবে মিলল। এলাকাটি কাঁকসা ব্লকের মধ্যে পড়ে। বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বা়ড়িগুলি কী ভাবে এই এলাকায় তৈরি হয়েছে, তা আমরা খতিয়ে দেখব। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের যোগাযোগ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy