জলমগ্ন: রাস্তা জলের তলায়। মানাচরের বাসিন্দারা যাতায়াত করছেন নৌকায়। নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ রবিবার সন্ধ্যার পরে আর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। রবিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে, এক লক্ষ ৫১ হাজার ৩৫০ কিউসেক হারে। দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তা ছিল, এক লক্ষ ৫৫ হাজার ৭৭৫ কিউসেক হারে। এমনটাই জানিয়েছে সেচ দফতর। তবে, এই পরিমাণ জল ছাড়ার ফলে হুগলির বিভিন্ন এলাকায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছে সেচ দফতর। পাশাপাশি, পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়ার দু’টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার দায়িত্বে রয়েছে রাজ্যের সেচ দফতর। তবে ব্যারাজে জল ছাড়ার বিষয়টি অনেকটাই নির্ভর করে মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে ডিভিসি কতটা জল ছাড়ছে, তার উপরে। রবিবার সন্ধ্যায় সেচ দফতরের এসডিও (ব্যারাজ) গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডিভিসি মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে এ পর্যন্ত অতিরিক্ত জল ছাড়ার বার্তা দেয়নি। ফলে, এই মুহূর্তে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আর বাড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে, ইতিমধ্যেই ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার ফলে হুগলির কিছু এলাকায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’
এ দিকে, ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার ফলে দামোদরের পাড়ে বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার মানাচর, পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার সিলামপুরের নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, প্লাবিত এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হচ্ছে। মানাচরের বরিশালপাড়ার একাংশ প্লাবিত। এখান থেকে বড় মানা ও ছোট মানা যাওয়ার রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে। গত তিন দিন ধরে পারাপার করতে হচ্ছে নৌকায়। নৌকা চালক শিপুল সরকার বলেন, ‘‘ভোর ৩টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নৌকা চালাতে হচ্ছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা তপন রায় রবিবার দুপুরে বাঁকুড়ার সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ থেকে অ্যাম্বুল্যান্স চড়ে সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তবে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় তাঁদেরও শেষমেশ নৌকায় পারাপার করতে হয়।
এ দিকে, জল ছাড়ার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষ-জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। মাঝের মানা এলাকার কালীপদ রায় বলেন, ‘‘বাদাম চাষের বীজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ডুবে গিয়েছে কচু, বরবটি, লাউ প্রভৃতি আনাজের খেত।’’ স্থানীয় চাষি শ্যামল হালদার পাঁচ কাঠা জমিতে গাঁদা ফুল, এক বিঘা জমিতে লাউ লাগিয়েছেন। সব ডুবে গিয়েছে জলে। তিন বিঘা ধান জমিও জলে ডুবেছে। তিনি বলেন, ‘‘ধান গাছ হয়তো জল নেমে গেলে ফের মাথা তুললেও তুলতে পারে। কিন্তু আনাজ খেত পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’
মহকুমা প্রশাসন জানিয়েছে, এলাকায় আপৎকালীন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে একটি স্পিড বোট রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশের গাড়িও রাখা আছে। পুলিশ পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় ব্যবস্থাপন
দফতরের দলকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy