Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Partha Chatterjee Bail Plea

পার্থের ভবিষ্যৎ কার হাতে? জামিন মামলায় তৃতীয় বেঞ্চ নির্দিষ্ট করে দিলেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি

পার্থদের জামিনের আবেদনের শুনানি হয় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু দুই বিচারপতি পার্থ-সহ পাঁচ জনের জামিন নিয়ে একমত হতে পারেননি। মামলাটি তৃতীয় বেঞ্চে পাঠালেন প্রধান বিচারপতি।

কলকাতা হাই কোর্টে তৃতীয় বেঞ্চে গেল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলা।

কলকাতা হাই কোর্টে তৃতীয় বেঞ্চে গেল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৪০
Share: Save:

নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের করা মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ন’জনের জামিন নিয়ে একমত হতে পারেননি কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি। মামলাটি এ বার তাই তৃতীয় বেঞ্চে পাঠানো হল। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ওই মামলাটি পাঠিয়েছেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে। একক বেঞ্চেই মামলাটি শুনবেন তিনি। সেখানেই পার্থ-সহ পাঁচ জনের জামিনের আবেদনের ফয়সালা হবে। ফলে পার্থদের ভবিষ্যৎ এখন বিচারপতি চক্রবর্তীর সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।

পার্থদের জামিনের আবেদনের শুনানি হয়েছিল হাই কোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। গত ২০ নভেম্বর এই মামলার রায় দেয় বেঞ্চ। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় ন’জনেরই জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু বিচারপতি সিংহ রায় তাঁর সঙ্গে একমত হতে পারেননি। তিনি চার জনের জামিন মঞ্জুর করলেও পার্থ-সহ বাকি পাঁচ জনের ক্ষেত্রে জামিনের বিরোধিতা করেন। দুই বিচারপতির কাছ থেকেই জামিন পান কৌশিক ঘোষ, শেখ আলি ইমাম, সুব্রত সামন্ত রায় এবং চন্দন ওরফে রঞ্জন মণ্ডল। জামিন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয় পার্থ, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিন্‌হার ক্ষেত্রে।

ডিভিশন বেঞ্চের কোনও মামলায় বিচারপতিরা একমত হতে না পারলে মামলাটি কোন বেঞ্চে যাবে, তা স্থির করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি তৃতীয় কোনও বেঞ্চে মামলাটি ফয়সালার জন্য পাঠান। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম সোমবার এই মামলাটি পাঠিয়েছেন বিচারপতি চক্রবর্তীর একক বেঞ্চে। চলতি সপ্তাহেই এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

কেন পার্থ-সহ পাঁচ জনের জামিনের বিরোধিতা করেছেন বিচারপতি সিংহ রায়? নির্দেশনামায় চারটি পর্যবেক্ষণ রয়েছে তাঁর। প্রথমত, এই সংক্রান্ত মামলার তথ্য দেখে বিচারপতির মনে হয়েছে, রাজ্য সরকারের একাংশ অভিযুক্তদের পরোক্ষ ভাবে বাঁচাতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা জামিন পেয়ে গেলে বিষয়টি দুর্ভাগ্যের হবে। দ্বিতীয়ত, বিচারপতি সিংহ রায় জানিয়েছেন, নিয়োগ মামলায় কেউ তাঁকে এমন কোনও তথ্য দেখাতে পারেননি, যাতে মনে হচ্ছে যে, সিবিআই ট্রায়াল শুরু করতে অযথা দেরি করছে। ফলে কেন্দ্রীয় সংস্থার দেরির কারণে পার্থেরা জেলে, তা মনে করছেন না বিচারপতি। তৃতীয়ত, বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সমগ্র নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড এই পাঁচ জন। তাঁদের দ্বারাই দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। সাধারণ অভিযুক্তদের সঙ্গে পার্থদের তুলনা করলে চলবে না, জানিয়েছেন তিনি। চতুর্থত, পার্থ-সহ যে পাঁচ জনকে জামিন দেওয়া হয়নি, তাঁরা এখনও প্রভাবশালী। তাঁরা জামিন পেলে নিয়োগ মামলার তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হতে পারে, মনে করেছেন বিচারপতি সিংহ রায়।

অন্য দিকে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত ছিল, অনির্দিষ্ট কালের জন্য কোনও ব্যক্তিকে আটকে রাখা তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার অনুরূপ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ যত গুরুতরই হোক না কেন, আদালতের সামনে বিচারপ্রক্রিয়ায় তা প্রমাণ করতে হবে। প্রমাণ না হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে এত দীর্ঘ সময় কারাগারে বন্দি করে রাখা যায় না। তাই পার্থদের জেল হেফাজতে রাখার আর প্রয়োজন নেই বলে মনে করেছেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে একই সঙ্গে সিবিআই তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy