দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের জমি। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সরকারের শিল্প প্রতিষ্ঠান দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) জমি রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমকে মাত্র এক টাকার বিনিময়ে হস্তান্তর করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করছেন বিরোধী নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, এর ফলে জমি বিক্রি করে রুগ্ণ ডিপিএলকে বাঁচানোর যে কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও তৃণমূল এ সব অভিযোগেআমল দেয়নি।
দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকায় শিল্প ও গৃহস্থালীর বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে ১৯৬০-এ ডিপিএল চালু হয়। বর্তমানে ৩০০ মেগাওয়াটের এবং ২৫০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট চালু আছে। বছরের পর বছর চরম লোকসানে চলা ডিপিএলকে বাঁচাতে অন্য সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। এর পরে ডিপিএলের উদ্বৃত্ত জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৮ সালে দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমি বিক্রির সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। পরে ধাপে ধাপে সমীক্ষা করে জমি নির্দিষ্ট করা হয়।
সিপিএমের দাবি, সম্প্রতি বিদ্যুৎ দফতরের যুগ্ম সচিবের সই করা একটি চিঠি থেকে জানা গিয়েছে, ডিপিএলের ১৩২.৫৯৯ একর জমি মাত্র এক টাকার বিনিময়ে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমকে নিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ, এর আগেও প্রায় ২০০ একর জমি সরকারি অন্য সংস্থাকে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “ডিপিএলের চরম আর্থিক সঙ্কটে সরাসরি কোনও সাহায্য বর্তমান রাজ্য সরকার করেনি। এ বার ডিপিএলের জমি কার্যত কেড়ে নিয়ে আরও সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ডিপিএলকে। আসলে ডিপিএলকে পাকাপাকি ভাবে বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সম্প্রতি সিটু প্রভাবিত ডিপিএল এমপ্লয়িজ় ইউনিয়ন ডিপিএলের মূল গেটে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয়। সিপিএমের বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতৃত্ব সেই কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিলেন। তাঁরা দাবি করেন, যাঁরা ডিপিএল গড়তে সরকারকে জমি দিয়েছিলেন, তাঁরা শিল্পের জন্য জমি দিয়েছিলেন। তাই শিল্পের জমিতে শিল্পই করতে হবে। এ ভাবে জমি এক টাকার বিনিময়ে ঘুরপথে কর্পোরেট মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপিও। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপ, “শিল্পের জন্য এলাকাবাসীর দেওয়া জমি বিক্রি করে শাসক দলের নেতাদের কাটমানি খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” যদিও, বিরোধীদের অভিযোগে আমল দিচ্ছে না তৃণমূল। দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “ডিপিএলের গরিমা যাতে পুনরুদ্ধার করা যায়, সে জন্য সব রকম ভাবনাচিন্তা করে চেষ্টা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের আপত্তিতে কিছু এসে যাবে না।” বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি ডিপিএলের কোনও আধিকারিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy