Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Durgapur Barrage Gate

শেষ হয়নি জল বেরনো, গেটের কাজে অপেক্ষা

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গেটগুলি দিয়ে দেড় হাজার কিউসেক হারে জল বয়ে যাচ্ছে। জলের স্রোতের পাশাপাশি, গেটের সামনের গভীরতাও সমস্যা বাড়িয়েছে। কারণ, প্রধান খাতটি বয়ে যাচ্ছে ৩১ নম্বর ও তার আশপাশের গেটগুলি দিয়েই।

অনেকটাই বেরিয়ে গিয়েছে জল। জলাধারে নেমে হুল্লোড়। দুর্গাপুর ব্যারাজে। সোমবার। ছবি: বিকাশ মশান

অনেকটাই বেরিয়ে গিয়েছে জল। জলাধারে নেমে হুল্লোড়। দুর্গাপুর ব্যারাজে। সোমবার। ছবি: বিকাশ মশান

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২০ ০১:১০
Share: Save:

শনিবার রাত থেকে লোক-লস্কর, প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে তৈরি দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) ইঞ্জিনিয়ারেরা। কিন্তু জল বেরনো আর শেষ হচ্ছে না। ফলে, সোমবার রাত পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারাজের বিকল লকগেট মেরামতির কাজে হাতই দিতে পারেননি তাঁরা। এ দিন ব্যারাজ পরিদর্শনে এসে বার্নপুরের ইস্কোর সিইও তথা ডিএসপি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইও এমভি কামালকর বলেন, ‘‘সব রকম ভাবে পাশে আছি আমরা। দরকার হলে, ডিএসপি-র সবাই কাজে নেমে পড়বেন।’’

শনিবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ দুর্গাপুর ব্যারাজের ৩১ নম্বর লকগেট বেঁকে জল বেরোতে শুরু করে। মেরামতির জন্য আরও পাঁচটি গেট খুলে দিয়ে ব্যারাজের সব জল বের করে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। বিকেলের দিকে ব্যারাজের বালির চর জেগে ওঠে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, রাতের মধ্যে ব্যারাজ পুরোপুরি জলশূন্য হয়ে যাবে। শুরু হয়ে যাবে মেরামতির কাজ। ডিএসপি থেকে পুরু ইস্পাতের চাদর, ঝালাইয়ের যন্ত্র-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে চলে আসেন ডিএসপির ইঞ্জিনিয়ার, প্রযুক্তিবিদ ও কর্মীরা। কিন্তু জলের প্রবাহ বন্ধ হয়নি ৩১ নম্বর ও তার আশপাশের গেটগুলি দিয়ে।

সেচ দফতরের কর্মীরা শনিবার রাত থেকেই নদীগর্ভে বালির বস্তা ফেলে বাঁধ দিয়ে জল আটকানোর চেষ্টা শুরু করেন। রবিবার রাতে মনে করা হচ্ছিল, সোমবার সকালের মধ্যে বাঁধ দেওয়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে। সে জন্য পুলিশকে এ দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত ব্যারাজের উপরে যান চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়। সেই মতো পুলিশ সকাল থেকে ব্যারাজ ও লাগোয়া এলাকায় মাইকে করে জানিয়ে দেয়, যানবাহন তো বটেই, সাধারণ মানুষও পায়ে হেঁটে ব্যারাজের রাস্তা দিয়ে চলতে পারবেন না। কিন্তু বাঁধ তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়, আপাতত ট্র্যাফিক বন্ধ করার কোনও দরকার নেই। ফলে, তা আর করা হয়নি।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গেটগুলি দিয়ে দেড় হাজার কিউসেক হারে জল বয়ে যাচ্ছে। জলের স্রোতের পাশাপাশি, গেটের সামনের গভীরতাও সমস্যা বাড়িয়েছে। কারণ, প্রধান খাতটি বয়ে যাচ্ছে ৩১ নম্বর ও তার আশপাশের গেটগুলি দিয়েই। এই অংশটি নদীর মাঝের অংশের চেয়ে নিচু। এ দিকে, বালির বাঁধ যত লম্বা হচ্ছে, তত সংকীর্ণ হচ্ছে জলের গতিপথ। ফলে, স্রোতও বাড়ছে। এর ফলে, বাঁধের কাজের গতি শ্লথ হচ্ছে। বালির বস্তার সারির পাশে মাটি কাটার যন্ত্র নামিয়ে বালি দিয়ে বাঁধের জোর বাড়ানো হচ্ছে। এ দিন সকালে ব্যারাজে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিংহ জানান, বাঁধ দেওয়ার কাজ শেষ হলে, মেরামতির কাজ শুরুর আগে পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কাছে ব্যারাজের রাস্তায় ট্র্যাফিক বন্ধ করার আর্জি জানানো হবে। তবে রাত পর্যন্ত বাঁধ দেওয়ার কাজ শেষ হয়নি।

ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকল গেট মেরামতির জন্য ইস্পাতের চাদর, ঝালাইয়ের যন্ত্র-সহ অন্য নানা সরঞ্জাম আনা হয়েছে। জল কমলেই মেরামতি শুরু হবে। জলের সংস্পর্শে এসে বৈদ্যুতিন ঝালাইয়ের যন্ত্র থেকে যাতে শর্ট সার্কিট হয়ে বিপদ না ঘটে, সে জন্য দরকার হলে নদীগর্ভ থেকে সামান্য উপরে বিকল্প পাটাতন বানিয়ে সেখানে যন্ত্রপাতি রেখে কাজ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। ডিএসপির এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘জল পুরোপুরি শুকোতে সময় লাগবে। দ্রুত যাতে মেরামত করা যায়, জল নেমে গেলেই যাতে কাজ শুরু করা যায়, সে জন্য সব ধরনের সতর্কতা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

ব্যারাজ পরিদর্শনে এসে ডিএসপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইও এমভি কামালকর বলেন, ‘‘জলের দরকার সবার। যত তাড়াতাড়ি সমস্যা মেটে, সে জন্য যা-যা করার তা করবে ডিএসপি।’’ দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, ‘‘ডিএসপি-র ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কাজ শুরুর পরে ১২ ঘণ্টা সময় লাগবে বলে তাঁরা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন। তবে তার আগেই যাতে কাজ শেষ করে ফেলা যায়, সে চেষ্টা তাঁরা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Barrage Durgapur Water gate Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy