Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

টানা বৃষ্টি দেখাল নিকাশির হাল

টানা বৃষ্টি হতেই ফুটে উঠল শহরের বেহাল নিকাশি। বাড়ি ছেড়ে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন বেশ কিছু পরিবার। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্তও জল নামেনি শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে।

জমা জলে বেহাল শহর। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

জমা জলে বেহাল শহর। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৬
Share: Save:

টানা বৃষ্টি হতেই ফুটে উঠল শহরের বেহাল নিকাশি। বাড়ি ছেড়ে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন বেশ কিছু পরিবার। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্তও জল নামেনি শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে।

বাসিন্দাদের অনেকেরই ক্ষোভ, আগে থেকে নিকাশি নিয়ে সচেতন হলে এতটা জল জমত না। পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের যদিও দাবি, ‘‘সকাল ৭টা থেকে জলমগ্ন এলাকার মানুষজনকে উদ্ধার করে পানীয় জল, নিকাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই এলাকাগুলিতে চিকিৎসক, ত্রাণ ও খাবারও পাঠানো হয়েছে।’’

রবিবার দিনভর কখনও ছিপছিপে, কখনও ভারী বৃষ্টিতে কার্যত ভেসে যায় চার ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড। ওই দু’টি ওয়ার্ড লাগোয়া বর্ধমান ১ ব্লকের সরাইটিকরের অবস্থাও শোচনীয় হয়ে ওঠে। সোমবার ভোর থেকেই বাড়ি ছাড়তে শুরু করেন ওই দুটি ওয়ার্ডের বাজেপ্রতাপপুর, হরিনারায়ণপুর-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকেই বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পরিজনেদের বাড়ি কিংবা স্থানীয় স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ওই দুটি ওয়ার্ডের ৩৭টি পরিবারকে ওই এলাকার দুটি স্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও শহরের বুড়ির বাগান সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। সে সব বাড়িতেও রান্না করা খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুরসভা।

চলছে মাছ ধরার আনন্দ। নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বসির আহমেদ জানান, তেঁতুলতলায় অতিবৃষ্টিতে ৮টি মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। শ্যামলাল রোড, সুভাষপল্লি, রসিকপুর, বাদশাহী রোড, নীলপুরের একটা রাস্তা, গোদার একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বৃষ্টি থামার বেশ কয়েক ঘন্টা পরেও ওই সব এলাকা থেকে জলে নামেনি। সোমবার বিকেল পর্যন্ত ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকেও জল নামার খবর মেলেনি। ওই দুটি ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মণ্ডল, রাজু দেবনাথরা বলেন, “নিকাশির অবস্থা বেহাল বলে বছরে ২-৩ বার আমাদের এই দশা হয়। বারবার বলেও কোনও লাভ হয় না।”

ওই দুই ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে গিয়েছে সাবঝোলা খাল। রাজাদের আমল থেকেই শহরের একাংশের নিকাশি হয় ওই খালের মাধ্যমে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খালের উপর দিয়ে বর্ধমান-কাটোয়া রোড গিয়েছে। ১৫টি বড় পাইপ দিয়ে রাস্তার উপর কালভার্ট করা রয়েছে। তার মধ্যে ১০টি পাইপ সংস্কারের অভাবে বুজে গিয়েছে। বাকি পাঁচটি পাইপ দিয়েও ঠিকমতো জল নিকাশি হয় না।

জলমগ্ন রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।

পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন পুরপিতা পরিষদের সদস্য খোকন দাস (পূর্ত)। তাঁর কথায়, “অতিবৃষ্টির জন্যই শহরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।” উপপুরপ্রধান খোন্দেকার মহম্মদ শাহিদুল্লা বা পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত যদিও বেহাল নিকাশির কথা মানতে চাননি। তাঁরা মনে করেন, “নিকাশি ভাল ছিল বলেই আগের মতো শহর ডুবে যায়নি। জল দাঁড়ালেও খুব দ্রুত নেমেও গিয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Bad condition drainage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE