ভরসা: মানকর গ্রামীণ হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র।
কখনও কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে অভব্য আচরণের অভিযোগ তুলে অশান্তি। আবার কখনও রোগীর মৃত্যুতে গাফিলতির নালিশ করে ডাক্তার-নার্সদের হেনস্থা। হাসপাতালে বারবার এমন গোলমালে আতঙ্কে ভুগছেন চিকিৎসক থেকে কর্মীরা, সকলেই। বুদবুদের মানকর গ্রামীণ হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে দাবি তাঁদের।
বুদবুদ ছাড়াও গলসি ১ ব্লকের নানা এলাকা, এমনকী আউশগ্রাম ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষজন এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। আশপাশের প্রায় ৫০টি গ্রামের বাসিন্দাদের চিকিৎসায় ভরসা হাসপাতালটি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন বর্হিবিভাগে প্রায় ৫০০ রোগী আসেন। এ ছাড়া সব সময়ই অনেক রোগী ভর্তি থাকেন।
এই রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে প্রায় সময়েই ঝামেলা লেগে থাকে। গত দু’সপ্তাহেই দু’বার অশান্তি বেধেছে। ২ অগস্ট হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স চালককে মানকর ও লাগোয়া এলাকার কিছু বাসিন্দা মারধর করেন। ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, চালক হাসপাতালে রোগী থেকে নার্স, সকলের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন। তাতে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ঠিকমতো পরিষেবাও পাচ্ছেন না রোগীরা। এই ঘটনার দিন স্বাস্থ্যভবনের দুই প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে। তাঁদের সামনেই জনতা ওই চালকের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ ওঠে। আহত চালককে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হয়।
১০ অগস্ট রাতে আউশগ্রাম ২ ব্লকের শোলাগড় গ্রামের এক যুবক হাসপাতালে মারা যান। রোগীর পরিজনেরা চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতালে চড়াও হন। ডাক্তার-নার্সদের হেনস্থা করা হয়। ভাঙচুর করা হয় কাচের টেবিল। ফেলে দেওয়া হয় ওষুধপত্রও।
বারবার এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে রোগী, চিকিৎসক, নার্সরা। বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, কিছু লোকজন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করতে চাইছেন। তাঁদের মধ্যে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মীও রয়েছেন। এলাকার বাসিন্দা তপন বিশ্বাস, হরদেব আঁকুড়েরা বলেন, ‘‘গরিব মানুষজনের একমাত্র চিকিৎসার জায়গা এই হাসপাতালটি। সেখানে এমন গোলমাল আমরা মেনে নেব না।’’ বারবার অশান্তিতে নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন হাসপাতালের সকলেই। এক রোগী নির্মল মিস্ত্রি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতের তাণ্ডবের কথা মনে পড়লেই আতঙ্ক হচ্ছে। আবার কখন কী হবে কে জানে!’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অভ্যন্তরীণ নানা বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্যভবনও নজর রেখেছে এই হাসপাতালের উপরে। ভারপ্রাপ্ত সুপার উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘‘হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy