আহত চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র
সাত দিনও কাটল না। ফের চিকিৎসক আক্রান্ত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রোগীর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে পাঁচ চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগ উঠল।
সোমবার ঘটনাটি ঘটে জরুরি বিভাগের তিন তলায় অস্থি ওয়ার্ডে। এর পরেই নিরাপত্তার দাবিতে জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি করেন। হাসপাতালের ডেপুটি সুপারকে ঘেরাও করে রাখেন। দীর্ঘ ক্ষণ কথার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের যে কমিটি রয়েছে, সেখানে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বুধবারই রাধারানি ওয়ার্ডের ভিতরে রোগীর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর করা হয়। ডাক্তারকে বাঁচাতে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষী ও হাসপাতালের ক্যাম্পের পুলিশকর্মীও জখম হন।
বর্ধমান মেডিক্যালে আগেও রোগীর পরিজনদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রবিবার রাতে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থেকে দুর্ঘটনায় জখম বাবলু শেখ নামে এক জনকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছিল। এ দিন দুপুরে তাঁরই পরিজনেরা ওয়ার্ডের রাস্তায় ভিড় করে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, তখন শল্য চিকিৎসক কৃষ্ণকমল দে তাঁদের বলেন, ‘হয় আপনারা সরুন, না হলে আপনারাই চিকিৎসা করুন’।
অভিযোগ, এর পরেই বচসা শুরু। চিকিৎসককে ধাক্কা মেরে একটি ঘরে ঢুকিয়ে মারধর করেন রোগীর পরিজনদের একাংশ। চিকিৎসককে বাঁচাতে গিয়ে সহকর্মী অরূপকুমার ঘোষ এবং তিন জুনিয়র ডাক্তারও নিগৃহীত হন। ওই বিভাগের আরও জুনিয়র ডাক্তার ও নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে এলে হামলাকারীদের কয়েক জন পালান। দু’জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রহৃত চিকিৎসক কৃষ্ণকমলবাবু বলেন, “রোগী মারা যাননি। সঙ্কটজনকও নন। তাঁরই চিকিৎসার স্বার্থে শুধু ওয়ার্ডের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার কথা বলায় গায়ে হাত তোলা হবে? এটা ভাবা যায়!” আর এক চিকিৎসক সঞ্জীব হালদারের কথায়, “কাছেই রোগী দেখছিলাম। চিৎকার শুনে ওয়ার্ডের বাইরে দেখি, দু’জন প্রবীণ চিকিৎসককে মারধর করা হচ্ছে। আমরা তিন জন গিয়ে তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মার খেয়ে গেলাম। আমি তো রোগীর বিছানা টপকে কোনও রকমে পালাই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy