Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Dengue Infection

একই এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ২১

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত দু’সপ্তাহ ধরে রসিকপুরে প্রায় প্রতি বাড়িতেই জ্বর হচ্ছে। ‘ফিভার ক্লিনিকে’ পরীক্ষা করে ১২ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে।

ডেঙ্গি ধরা পড়তেই শুরু সাফাই। বর্ধমানের রসিকপুরে।

ডেঙ্গি ধরা পড়তেই শুরু সাফাই। বর্ধমানের রসিকপুরে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ০৯:১৩
Share: Save:

এক দিনে ১২ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল বর্ধমান শহরের রসিকপুরে। বুধবারও আরও ন’জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে ওই এলাকায়। যে এলাকা মাসের পর মাস ‘অপরিচ্ছন্ন’ থাকে, সাফাই কর্মীদের দেখা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ, সেখানেই বুধবার সকাল থেকে মশা মারার স্প্রে, ব্লিচিং পাউডার নিয়ে কর্মীদের ছুটোছুটি করতে দেখা যায়।স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশেরই দাবি, ডেঙ্গি নিয়ে পুরসভার মাথাব্যথা ছিল না। এখন সব কর্মীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ দিন দুপুরে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে ‘ফিভার ক্লিনিকটি’ ঘুরে দেখেন ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুবর্ণ গোস্বামী। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথাও বলেন। তিনি বলেন, “মঙ্গলবার ১২ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। বুধবার ১৭ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। তাতে ন’জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, বাড়ির ভিতর আবর্জনার স্তুপে জল জমে রয়েছে। মশার লার্ভা আছে। আমরা মসজিদ কর্তৃপক্ষকেও ডেঙ্গির বিরুদ্ধে প্রচার করার জন্য অনুরোধ করেছি।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত দু’সপ্তাহ ধরে রসিকপুরে প্রায় প্রতি বাড়িতেই জ্বর হচ্ছে। ‘ফিভার ক্লিনিকে’ পরীক্ষা করে ১২ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। বুধবারও ১০০ জনের কাছ থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। গত ২৫ জুলাই থেকে এই শিবির চালু হয়েছে। সোমবার রক্তের নমুনা সংগ্রহের পরেই ন’জন ডেঙ্গি আক্রান্ত বলে জানা যায়। আগে আরও তিনজনের রক্তে ডেঙ্গির নমুনা মিলেছিল। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতর সেই রিপোর্ট পুরসভা থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়ে দেয়।

এলাকাবাসী এ দিন পুর ও স্বাস্থ্য কর্তাদের সামনেই সাফাই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের দাবি, গ্রীষ্মের শুরু থেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার, বাড়িতে জমা জল আছে কি না দেখা, মশার লার্ভা আছে কি না দেখার কথা স্বাস্থ্যকর্মীদের। কিন্তু কাউকে দেখা যায়নি।

স্থানীয় কয়েকজন মহিলার কটাক্ষ, “চারদিক এত অপরিষ্কার, মশারা বাসা না বেধে যায় কোথায়? সে জন্যই ডেঙ্গি বাড়ছে।” পুকুর বুজিয়ে ফেলে সেখানে আবর্জনা ফেলারও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। স্বাস্থ্যকর্মীদের পাল্টা দাবি, ডেঙ্গি নিয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের হেলদোল ছিল না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের উপরেও জোর দেওয়া হয় এখন শুধু এখানকার স্বাস্থ্য বা আশাকর্মীরা নন, অন্য ওয়ার্ডের কর্মীদেরও নিয়ে আসা হয়েছে।

এ দিন সকাল থেকেই বিধায়ক (বর্ধমান দক্ষিণ) খোকন দাসের উপস্থিতিতে আক্রান্ত এলাকা, বর্ধমানের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসিকপুরে সাফাই-অভিযান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালায় পুরসভা। বিধায়ক বলেন, “আবর্জনা রয়েছে। বাড়িতে জল জমে রয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতন হতে বলা হয়েছে। পুরসভা তার কাজ করবে। কিন্তু মানুষকেও সতর্ক হতে হবে।’’ দুপুরে রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরা ওই এলাকা ঘুরে দেখেন। বিকেলে নগরোন্নয়ন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষ বৈঠকও করেন। জানা গিয়েছে, তিন দিন ধরে শহরের ৩৫টি ওয়ার্ড ঘুরে দেখবেন তাঁরা। রিপোর্ট দিয়ে কী ভাবে কাজ করতে হয়, তা দেখিয়ে দেবেন। তবে আবর্জনা, জল জমা নিয়ে বর্ধমান পুরসভার কাজ নিয়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন বলেও জানা গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE