আমন ধান চাষের প্রস্তুতি। কালনার মধুপুরে। নিজস্ব চিত্র।
একটানা গরম, বৃষ্টির অভাবে মার খেয়েছে আনাজ। বহু জমিতে শুকিয়েছে গাছ। ছোট ছোট জলাশয়গুলিতে জলাভাব দেখা দেওয়ায় পাট পচাতেও সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। এ বার বৃষ্টির অভাবে জেলায় আমন ধানের চারা বোনার কাজও চলছে ধীর গতিতে। যদিও কৃষি কর্তাদের দাবি, আমন ধানের চারা পোঁতার কাজ করা যায় ১৫ অগস্ট পর্যন্ত। কয়েক দিন ভাল বৃষ্টি পেলেই কাজে গতি আসবে।
রাজ্যের ‘শস্য ভান্ডার’ পূর্ব বর্ধমানে সব থেকে বেশি আমন ধানের চাষ হয়। মূলত বৃষ্টিনির্ভর এই চাষ। জুলাইয়ে বীজতলা থেকে ধানের চারা নিয়ে গিয়ে মূল জমিতে বসান চাষিরা। এই সময় প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। কৃষি দফতরের হিসাব অনুযায়ী, জুলাইয়ের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ২৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে। সেখানে হয়েছে মাত্র ১৩৯.৩ মিলিমিটার। সেই কারণেই গতি কমেছে আমনের চারা পোঁতার কাজে। বাধ্য হয়ে বেশির ভাগ চাষিই মাটির তলা থেকে জল তুলছেন। এ বার জেলায় ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।কৃষি কর্তাদের দাবি, গত বছর জুলাইয়ে বৃষ্টি কম হয়েছিল। তবে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে ২৬৬৫ হেক্টর জমিতে ধানের চারা পোঁতার কাজ হয়েছিল। এ বার এই সময়ের মধ্যে কাজ হয়েছে ২১৬০ হেক্টর জমিতে।
আকাশ মাঝেমধ্যেই কালো করে আসছে। তবে বৃষ্টি মিলছে ছিটেফোঁটা। চাষিদের দাবি, মাঠের বীজতলায় চারা তৈরি হয়ে রয়েছে। শুধু কিছুটা ভারী বৃষ্টি প্রয়োজন। যাতে জমিতে জল জমে যায়। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ধান চাষি হাতেম শেখ বলেন, ‘‘মাঝে মধ্যে যেটুকু বৃষ্টি মিলেছে তাতে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। এখন ভারী বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে রয়েছি।’’ তাঁর দাবি, শুরু থেকে মাটির তলার জল চড়া দামে কিনে চাষ করলে চাষের খরচ বেড়ে যাবে। কালনা ১ ব্লকের চাষি মন্টু পালও বলেন, ‘‘ভাল বৃষ্টি নেই বলে ধান পোঁতায় তেমন গা নেই। দ্রুত কিছুটা বৃষ্টি না পেলে চাষ পিছিয়ে যাবে।’’
জেলার এক কৃষি আধিকারিক বলেন, ‘‘গত বছর এই সময় যতখানি আমন পোঁতা হয়েছিল, এ বার তার থেকে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। যা পরিস্থিতি ব্লকগুলিতে ১০০ হেক্টরের আশপাশে এখনও পর্যন্ত চাষ হয়েছে। আশা করছি বৃষ্টির ঘাটতি মিটে যাবে।’’
জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ জানান, ১৫ অগস্ট পর্যন্ত মূল জমিতে ধানের চারা পোঁতার কাজ হয়। বর্তমানে ধানের চারা বেশ ছোট রয়েছে। যে ভাবে মেঘের সঞ্চার হচ্ছে আশা করা যায় ভারী বৃষ্টি হবে।
সে ক্ষেত্রে লক্ষ্যপূরণে কোনও বাধা থাকবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy