Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

মাথা কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়ে পোস্টার

গত বুধবার শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড়নীলপুরের বেচারহাট কলোনির তৃণমূল কর্মী পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় চৈত্রপুর গ্রামে। ওই দিনই পূর্ণেন্দুবাবুর স্ত্রী সন্ধ্যাদেবী এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত কয়েক জনের নামে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন।

এই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

এই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও মেমারি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০০:১১
Share: Save:

সাদা কাগজের উপরে নীল কালিতে লেখা পোস্টার। তাতে লেখা, ‘বিজেপি করলে মাথা কেটে নেবো’। রবিবার সকালে বর্ধমান শহরের বড়নীলপুর ও বৈকণ্ঠপুর ১ পঞ্চায়েতের বাম এলাকায় কিছু বাড়ির দেওয়ালে এমন পোস্টার দেখা গিয়েছে। এমনকি, তৃণমূল কর্মীকে ‘খুনের’ অভিযোগে ধৃতের বাড়িতেও এই পোস্টার পড়েছে। তবে কেউ বা কারা, কেন এই পোস্টার সাঁটিয়েছে, তা নিয়ে বিজেপি রবিবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করেনি।

গত বুধবার শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড়নীলপুরের বেচারহাট কলোনির তৃণমূল কর্মী পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় চৈত্রপুর গ্রামে। ওই দিনই পূর্ণেন্দুবাবুর স্ত্রী সন্ধ্যাদেবী এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত কয়েক জনের নামে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন। খুনের অভিযোগে এলাকার পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।

এই ঘটনাতেই অভিযুক্ত প্রদীপ দে বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাঁর বাড়ির দেওয়ালেও পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। রবিবার সকালে প্রদীপবাবুর বাবা উত্তমবাবু বলেন, “আমরা বিজেপি করি বলেই আমাদের বাড়ির দেওয়ালে পোস্টার মেরে ‘মাথা কাটার হুমকি’ দেওয়া হয়েছে।’’ কিছু দূরে আরেকটি বাড়িতেও ওই একই রকম পোস্টার পড়েছে। ওই বাড়ির শিম্পা রায়ের অভিযোগ, “তৃণমূলের ভয়ে আমাদের বাড়ির ছেলেরা রাতে থাকতে পারছেন না। তার পরে এমন পোস্টার পড়ায় আমাদের হাত-পাঁ কাপছে।’’ ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, শনিবার গভীর রাতে কয়েক জন ছেলে ওই পোস্টার সাঁটিয়ে যায়। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, যারা পোস্টার সাঁটাচ্ছিল, তাদের ধরার ‘মতলব’ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাদের হাতে অস্ত্র থাকায় কেউ আর বার হতে সাহস করেননি।

অন্য দিকে, শহর লাগোয়া বৈকন্ঠপুর ১ পঞ্চায়েত প্রধান জয়দেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও বেশ কয়েক বার হামলা হয় বলে অভিযোগ। ওই পঞ্চায়েত এলাকাতেও বেশ কিছু এমন পোস্টার পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।

তবে রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ বা কারা এই পোস্টার সাঁটিয়েছে, তা নিয়ে বিজেপি অভিযোগ করেনি। বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বিজেপির সুনামিকে ভয় পাচ্ছে যারা, সেই রাজনৈতিক দল মাওবাদী কায়দায় পোস্টার সাঁটিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। ভয় দেখিয়ে কি আর মানুষের কণ্ঠ বন্ধ করা যায়? জনগণ তাঁর হিসেব বুঝতে শুরু করেছেন।’’ তবে প্রদীপবাবুর বাবা উত্তমবাবু স্পষ্টতই অভিযোগ করেন, ‘‘এ বার তো বাইরে যেতে ভয় লাগবে। কখন না আমাদের মাথা কেটে নেয় তৃণমূলের গুন্ডারা!”

যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে দেখুক কারা ওই পোস্টার সাঁটিয়েছে। আমরা এই সব ‘বদলার’ রাজনীতি করি না।’’

আজ, সোমবার জেলার নানা এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অরাজকতা তৈরির অভিযোগে পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের একটি প্রতিনিধিদল দেখা করতে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দী।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Posters
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy