—প্রতীকী চিত্র।
বেশ কয়েক মাস বন্ধ ছিল বেতন। অর্থের অভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে না পারায় মৃত্যু হল ইসিএল পরিচালিত এক স্কুলের শিক্ষিকার। এমনই দাবি মৃত শিক্ষিকা রানু মুখোপাধ্যায়ের (৬২) স্বামী স্বামী করুণাময় মুখোপাধ্যায়ের। বেতন বন্ধের বিষয়টি কলকাতা হাই কোর্টে বিচারাধীন জানিয়ে এ নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। কুলটির সাঁকতোড়িয়া কলোনি এলাকার বাসিন্দা রানুদেবীর মৃত্যু হয় সম্প্রতি দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রানু ইসিএল পরিচালিত সাঁকতোড়িয়া কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। ২০২৩-র জুলাইের পরে তিনি বেতন পাননি, দাবি তাঁর স্বামীর। তিনি জানান, স্ত্রী যকৃতের সমস্যায় ভুগছিলেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হলেও খরচ হয়েছিল অতিরিক্ত টাকা। ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ সামলাতে না পারায় স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান করুণাময়। পেশায় ঠিকাদার করুণাময়ের দাবি, ‘‘স্ত্রীর বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে যাই। চিকিৎসার ব্যয়বহুল খরচ বহন করতে পারিনি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সব চিকিৎসা হয় না। সে কারণেই স্ত্রীর মৃত্যু হল।’’
ঝাড়খণ্ডের মোগমার স্বামী বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায় জানান, ১৯৭৪-এ ইসিএলের কর্মীদের পরিবারের পড়ুয়াদের পড়াশোনার জন্য বেশ কিছু বিদ্যালয় চালু করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট কোলিয়ারির ম্যানেজার, এজেন্ট এবং ওয়েলফেয়ার অফিসারকে নিয়ে সেগুলির পরিচালন সমিতি গড়া হয়। তবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কাঠামো ইসিএলের অন্য কর্মীদের থেকে আলাদা। ১১৮টি বিদ্যালয়ে ৪০৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা কাজ করতেন। স্থায়ী কর্মীর স্বীকৃতি দাবি করে ২০১৬-এ কৃষ্ণা, রানু-সহ ৪৪ জন হাই কোর্টে মামলা করেন। এরই মধ্যে ২০২২-র শেষের দিক বেতন বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন। হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, সকলকে দ্রুত তিন মাসের বেতন মিটিয়ে দিতে হবে। সে নির্দেশ পালন করেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। পরে মামলাটি গড়ায় ডিভিশন বেঞ্চে। এখনও বিষয়টি বিচারাধীন।
অন্ডালে ইসিএলের একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক কুমার অমলেন্দুর দাবি, ২০২৩-র ২৭ অক্টোবর ইসিএল পরিচালন সমিতি ৬৫ বছরের বেশি বয়সি ২৩৪ জনকে ছাঁটাই করে ৪৮টি বিদ্যালয় বন্ধ করে দেন। এখন ১৬৯ জন কর্মরত। তাঁদের মধ্যে কেউ ২০২৩-র এপ্রিলে, কেউ নভেম্বরে শেষ বার বেতন পেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে ইসিএল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy