Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

অফিস দখল রোখার ডাক সিপিএমের

সম্প্রতি রানিগঞ্জের অমৃতনগর কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় বামেদের খনি শ্রমিক সংগঠন সিএমএসআই-এর কার্যালয় দখলের অভিযোগ উঠেছে আরএসএস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০০:৩২
Share: Save:

দলের কার্যালয় যাতে দখল না হয়ে যায়, কর্মীদের একজোট হয়ে তা নজর রাখার নির্দেশ দিলেন সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব। দল সূত্রের খবর, উচ্চ নেতৃত্বের তরফে এই বার্তা ইতিমধ্যে আঞ্চলিক স্তরের নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যও নিচ্ছেন নেতারা।

সম্প্রতি রানিগঞ্জের অমৃতনগর কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় বামেদের খনি শ্রমিক সংগঠন সিএমএসআই-এর কার্যালয় দখলের অভিযোগ উঠেছে আরএসএস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের বিরুদ্ধে। রানিগঞ্জের অশোকপল্লি এলাকায় দখল হয়ে যাওয়া দলীয় কার্যালয় বুধবারই পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি সিপিএমের। দলের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণা দাশগুপ্তের অভিযোগ, ২০১৬ সালে তাঁদের কার্যালয়টি তৃণমূল দখল করে নিয়েছিল। তাঁর দাবি, ২৯ মে তৃণমূলের পতাকা খুলে ওই কার্যালয়ে কাজ শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ তৃণমূল ফের কার্যালয়টি দখল করে বলে অভিযোগ। বুধবার সকালে সেটি পুনর্দখল করা হয়েছে বলে জানান প্রাক্তন কাউন্সিলর। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এর মধ্যেই দল ও গণ সংগঠনগুলির কার্যালয় দখল ঠেকাতে নেতৃত্ব সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বলে সিপিএম সূত্রে খবর। সিটুর জেলা সম্পাদক তথা সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য বংশগোপাল চৌধুরী অভিযোগ করেন, রাজ্যে ক্ষমতায় এসে তৃণমূল তাঁদের কার্যালয় দখলের চেষ্টা করেছিল। এখন ঠিক সেই কায়দায় দলছুট তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপিও কার্যালয় দখল অভিযানে নেমেছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দলের সব নেতা-কর্মীকে জানিয়েছি, বিজেপির প্রতি একেবারেই নমনীয় হওয়া যাবে না। সকাল-সন্ধ্যায় নিয়ম করে প্রত্যেক এলাকায় কার্যালয় খুলে বসতে হবে। দখল করতে এলেই প্রতিরোধ করতে হবে।’’

খনি-শিল্পাঞ্চলে সিপিএম এবং তার গণ সংগঠনগুলির কার্যালয় দখল নতুন নয়, দাবি সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে সিটুর কার্যালয় ভাঙচুর চালিয়ে দখল করা হয়। পার্থবাবুর অভিযোগ, ‘‘বহু বছর সেই অফিস তালাবন্ধ ছিল। আমরা ঢুকতে পারিনি। দিনের পর দিন আন্দেলন করেছি। পরে শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি আমাদের হাতে কার্যালয়ের চাবি ফিরিয়ে দিয়েছেন।’’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালে ভোটের পরে শ্রীপল্লিতে সিপিএমের একটি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তৃণমূলের লোকজন। পুড়ে ছাই হয়ে যায় জিনিসপত্র। প্রাণভয়ে কয়েক মাস সেখানে যাননি দলের কর্মীরা। পরে জেলা কমিটির উদ্যোগে প্রতিবাদ আন্দোলন হয়। পার্থবাবু বলেন, ‘‘কয়েক মাস পরেই আমরা সেই কার্যালয় পুনর্দখল করেছি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ওই কার্যালয়ের পাশে তাঁদের দলের একটি জমি অবৈধ ভাবে ঘিরে ফেলা হয়েছে। কে বা কারা এই কাজ করছে তা জানার পাশাপাশি জমির মালিকানা সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে তাঁর দাবি।

কার্যালয় দখলের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মেয়র জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘আমরা দখলের রাজনীতি করি না, সেটা তো সিপিএম নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে দখলের চেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গে দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘একেবারে মিথ্যে কথা। এটা আমাদের সংস্কৃতি নয়। জোর করে দখল করলে মন পাওয়া যায় না। আমরা মানুষের মন পেতে চাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Party Office Raniganj Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy