দুর্গাপুর পুরসভার ২ নম্বর বরো অফিসে। নিজস্ব চিত্র
বেলা ১১টা। বরো অফিসের বাইরে নাগরিক পরিষেবায় খামতি-সহ নানা বিষয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন সিপিএম নেতা, কর্মীরা। খানিক বাদে অফিসে বরো চেয়ারম্যানের ঘরে ঢুকলেন পাঁচ নেতা। প্রত্যেককেই গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানালেন চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার। শুক্রবার দুর্গাপুরের এই ঘটনাকে রাজনৈতিক সৌজন্য হিসেবেই দেখছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।
ঘটনাস্থল, দুর্গাপুর পুরসভার ২ নম্বর বরো অফিস। সেখানে নানা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হবে, সে কথা আগেভাগেই জানিয়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। সেই মতো এ দিন শুরু হয় বামেদের কর্মসূচি। বরো অফিস সূত্রে জানা যায়, বিরোধীদের স্বাগত জানাতে আগেভাগেই তৈরি ছিলেন বরো চেয়ারম্যান তথা ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রমাপ্রসাদবাবু। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বরো অফিসের বাইরেছিল পুলিশও।
কিন্তু ‘অপ্রীতি’ তো দূরঅস্ত, সময় যত গড়িয়েছে ‘প্রীতির’ ছবিটাই সামনে এসেছে বলে জানান বরো অফিসের লোকজনেরা। তাঁরা জানান, সিপিএম নেতৃত্ব অফিসে ঢুকতেই তাঁদের প্রথমে বসতে বলেন রমাপ্রসাদবাবু। তার পরে প্রত্যেককে গোলাপ-অভ্যর্থনা। এই ‘পরিবেশ’ দেখে ততক্ষণে ফিরে যান পুলিশকর্মীরাও।
বিরোধীদের অভ্যর্থনা শেষে রমাপ্রসাদবাবু বলেন, ‘বলুন, আপনাদের কী দাবিদাওয়া?’ সিপিএম নেতৃত্ব নাগরিক পরিষেবা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে অভিযোগ তোলেন। রমাপ্রসাদবাবুর নির্দেশ মতো এক জন প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ের ‘নোট’ও নিয়ে রাখেন।
সম্প্রতি অন্য একটি বরো অফিসে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার কথা জানিয়েও বরো চেয়ারম্যানের দেখা না পেয়ে সিপিএম ‘রাজনৈতিক শিষ্টাচার’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। এই আবহে কেন এমন অভ্যর্থনা, তা নিয়ে কৌতহল তৈরি হয়েছে শহরে। রমাপ্রসাদবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘এটা রাজনৈতিক সৌজন্য। বিরোধী দলকে সম্মান জানাতেই গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানিয়েছি। আমরা চাই সবাই উন্নয়নে যোগ দিন।’’ সঙ্গে এ-ও জানান, বরো অফিস সংস্কার করে নতুন ভাবে গড়ে তোলার পরে এই প্রথম বিরোধীরা সেখানে এলেন। তাই তাঁদের স্বাগত জানাতে এমন সিদ্ধান্ত। তবে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েও সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘এমনটাই তো হওয়া উচিত। কিন্তু তৃণমূলের রাজনীতিটাই অসৌজন্যের। ফলে, গোলাপ ফুলে তা কিঢাকা পড়বে?’’
তবে স্মারকলিপির বিষয় নিয়ে রমাপ্রসাদবাবু ও সিপিএম নেতৃত্বের মধ্যে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। রমাপ্রসাদবাবুর বক্তব্য, ‘‘স্মারকলিপিতে যে যে বিষয়ে দাবি ও অভিযোগ করা হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই সব কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজও চলছে। দু’-এক জায়গায় রাস্তা হয়তো ভেঙে গিয়েছে। মেয়রের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত মেরামত করা হবে।’’ কিন্তু সিপিএম নেতাদের দাবি, বরো চেয়ারম্যান ঠিক কথা বলছেন না। ২৩ সেপ্টেম্বর পুরসভার সামনে সমাবেশ করে দাবিদাওয়া জানানো হবে বলে জানান তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy