Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bamboo

কোভিড-কড়াকড়ির জের, ধুঁকছে বাঁশ-বেত শিল্প

করোনার জন্য গত বছর প্রায় দীর্ঘদিন লকডাউন জারি ছিল। এতে বহু মানুষ নিজেদের কাজ হারিয়েছেন।

— ছবি সংগৃহীত

— ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২১ ০৫:৫৬
Share: Save:

প্রায় দেড় বছর করোনায় বিদ্ধ গোটা দেশ। পরিস্থিতির চাপে পড়ে অনেকেই পেশা বদলে ফেলেছেন। তবে নিজেদের শিল্পীসত্ত্বাকে বিসর্জন দিতে পারেননি কাঁকসার সুমিত্রা মাহালি, আনন্দ মাহালিরা। তাই এখনও কিছু বাড়তি রোজগারের আশায় তৈরি করে চলেছেন মোড়া, পাখা, ঝুড়ির মতো বাঁশ ও বেতের নানা সামগ্রী।

করোনার জন্য গত বছর প্রায় দীর্ঘদিন লকডাউন জারি ছিল। এতে বহু মানুষ নিজেদের কাজ হারিয়েছেন। মার খেয়েছে ব্যবসাও। দুর্গাপুজোর পর থেকে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হলেও, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ফের করোনা বাড়তে থাকে দেশজুড়ে। ফের জারি হয় কড়া বিধিনিষেধ। বাদ যায়নি এ রাজ্যও। মে মাস থেকে বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে এখানে। আর তার জেরেই সমস্যায় পড়েছেন বাঁশ ও বেতের সামগ্রী তৈরির শিল্পীরা।

কাঁকসা জঙ্গলমহল এলাকায় বহু গরিব পরিবারের মানুষজন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা জানান, গ্রামবাংলায় বাঁশ ও বেতের তৈরির সামগ্রীর চাহিদা রয়েছে। গরমের দিনে হাতপাখার কদরও থাকে। তা ছাড়া, বিভিন্ন পুজোর কাজে লাগে ঝুড়ি, সাজির মতো সামগ্রী। কিন্তু এখন সব বন্ধ। বাজারেও পৌঁছতে পারছেন না তাঁরা। ফলে, এক প্রকার বাড়িতেই রেখে দিতে হচ্ছে সামগ্রী।

কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতের ডাঙাল গ্রামের মাহালিপাড়ায় প্রায় ৬০টি পরিবার রয়েছে, যারা সারা বছর বাঁশের নানা সামগ্রী তৈরি করে। আনন্দ মাহালি নামে এক জন জানান, বছরভর বিভিন্ন পুজোর জন্য ঝুড়ি, কুলো, ফুলের সাজির চাহিদা থাকে। মূলত, গ্রামে অনেক মহাজন এসে বরাত দিয়ে যান। পাশাপাশি, পানাগড়, বীরভূমের ইলামবাজার, দুর্গাপুরের মতো বাজারে তাঁরাও সেই সব জিনিস বিক্রি করতে যান।

করোনার জেরে পরিবহণ বন্ধ। আবার মহাজনেরাও আসছেন না। এই অবস্থায় তাঁরা মাল তৈরি করে বাড়িতেই রেখে দিচ্ছেন। ওই গ্রামের সুমিত্রা মাহালি বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পেশা ছেড়ে বেশিরভাগই দিনমজুরি করছেন। কিন্তু আমরা এই কাজের উপরেই সাধারণত নির্ভরশীল। তাই অন্য কাজের ফাঁকে কিছু বাঁশ ও বেতের জিনিস তৈরি করে রাখছি। যদি বিক্রি হয়!’’

কাঁকসার মলানদিঘির বাদ্যকরপাড়ায় বেশ কিছু মানুষ বেতের সামগ্রী তৈরির কাজে যুক্ত। তাঁরা জানান, এই অবস্থায় কোনও বাজারেও যাওয়া সম্ভব নয়। আবার গ্রামে গ্র-মে বিক্রিও করতে যেতে পারছেন না। ফলে, জিনিস তৈরি করে বাড়িতে রেখে দেওয়া ছাড়া, আর কোনও উপায় নেই তাঁদের। কয়েকজন শিল্পী উদয় বাদ্যকর, মিঠু বাদ্যকরেরা জানান, হাতের কাজ করেই সংসার চলে। কিন্তু এখন আর সংসার চলছে না। যদি সরকার সাহায্যে এগিয়ে আসে তো ভাল হয়! এ বিষয়ে বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিল্পীদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। পাশাপাশি, সাহায্যের আবেদন করে থাকলে তা খতিয়েও দেখা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bamboo Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy