ফাইল চিত্র
শহরের দুই বৃদ্ধের করোনা-পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ এসেছে বলে জানিয়েছিল মহকুমা (দুর্গাপুর) প্রশাসন। কিন্তু নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষার সময়, দু’জনের পরিবারের লোকজনকে তড়িঘড়ি ‘কোয়রান্টিন’ থেকে বাড়ি পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও আইসিএমআর-এর কাছে চিঠি দেওয়ার কথা জানালেন দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়।
গাঁধী মোড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই দুই বৃদ্ধের গত ৭ মে নমুনা সংগ্রহ করে, কলকাতার একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ১০ মে দু’জনের রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। তার পরে তাঁদের দু’জনকে মলানদিঘির ‘কোভিড-হাসপাতালে’ স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে ওই হাসপাতালের ও আরজি কর হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করানো হয়। ১২ ও ১৩ মে যথাক্রমে কোভিড হাসপাতাল ও আরজি করের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে। ১২ মে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয় গাঁধী মোড়ের বেসরকারি হাসপাতালে। প্রশাসন প্রথম পরীক্ষার রিপোর্টকে ‘ফলস রিপোর্ট’ ঘোষণা করে। ১৩ মে ‘কোয়রান্টিন’-এ থাকা দুই পরিবারের প্রায় ২১ জনকে বাড়ি পাঠানো হয়।
এই গোটা প্রক্রিয়াটি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়ক। তিনি জানান, প্রথম ও দ্বিতীয়বার নমুনা সংগ্রহের মধ্যে তিন-চার দিন ব্যবধান রয়েছে। সেই সময়ে তাঁদের চিকিৎসা চলছিল। তাই দ্বিতীয়বার নমুনা পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ এলেও আইসিএমআর-এর বিধি অনুযায়ী, আগের রিপোর্টটি ‘পজ়িটিভ ছিল না’, এটা বলা যায় কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বিধায়ক বলেন, ‘‘যদি একই সময়ে সংগ্রহ করা নমুনা তিনটি ল্যাবরেটরিতে আলাদা ভাবে পরীক্ষার পরে, তিনটিতেই নেগেটিভ ফল আসত তা হলে বলার কিছু ছিল না।’’
বিধায়কের দাবি, আইসিএমআর-এর বিধি অনুযায়ী, দু’টি পরীক্ষার মধ্যে সাত দিনের ব্যবধান থাকা দরকার। প্রথম পরীক্ষায় ‘পজ়িটিভ’ এলে ও দ্বিতীয় পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ এলে ৪৮ ঘণ্টা পরে ফের নমুনা পরীক্ষা করা উচিত। বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘এ ক্ষেত্রে তা না করে তড়িঘড়ি পরবর্তী পদক্ষেপ করে প্রশাসন।’’
সন্তোষবাবু জানান, ৭ মে মহকুমাশাসক জানিয়েছিলেন, সরকারি পরীক্ষার পরে, ‘নেগেটিভ’ ফল এলে আগের রিপোর্টটি ‘ফলস রিপোর্ট’ বলে গণ্য হবে। বিধায়কের দাবি, “এই ঘোষণা করোনা চিকিৎসা-বিধির পরিপন্থী। তা হলে যে ল্যাবরেটরির ফল নিয়ে প্রশ্ন, সেই ল্যাবরেটরির বিরুদ্ধে সরকার কেন আইনি পদক্ষেপ করেনি? করোনা রুখতে সতর্কতাই একমাত্র পথ। সেখানে দুর্গাপুরের দুই রোগীর ক্ষেত্রে যে দ্রুততার সঙ্গে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকে।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘যাবতীয় নির্দেশিকা মেনেই সব পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy