Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪
সালানপুর

কন্যাশ্রীতে পিছিয়ে, চিন্তায় কর্তারা

কন্যাশ্রী প্রকল্প রূপায়ণে পিছিয়ে পড়েছে বেশ কিছু স্কুল। বারবার বৈঠক করেও হাল ফেরানো যাচ্ছে না। কী ভাবে বেশি সংখ্যক ছাত্রীকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা যায়, সে নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সালানপুর ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০১:১৫
Share: Save:

কন্যাশ্রী প্রকল্প রূপায়ণে পিছিয়ে পড়েছে বেশ কিছু স্কুল। বারবার বৈঠক করেও হাল ফেরানো যাচ্ছে না। কী ভাবে বেশি সংখ্যক ছাত্রীকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা যায়, সে নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সালানপুর ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

খামতি কোথায়, সম্প্রতি তার একটি সমীক্ষা করেছে ব্লক প্রশাসন। দেখা গিয়েছে, চিত্তরঞ্জন চক্রের নানা স্কুলে বেশ কিছু ছাত্রী অনিয়মিত। ফলে, তারা কন্যাশ্রী প্রকল্পের ব্যাপারে কিছু জানতে পারছে না। আবার, বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষেরও সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। তাঁরা উদ্যোগী হচ্ছেন না। প্রশাসনের কর্তারা জানান, এই দুই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আলোচনা শুরু হয়েছে। সালানপুরের বিডিও প্রশান্ত মাইতি বলেন, ‘‘কন্যাশ্রী প্রকল্প রূপায়ণে আরও ভাল কাজ করতে হবে। তাই বিভিন্ন স্কুলের প্রধানদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করছি।’’ তিনি জানান, এমন অনেকগুলি স্কুল চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে প্রকল্পটি রূপায়ণের আরও সুযোগ আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে সে কথা জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চিত্তরঞ্জন রেল শহরের তিনটি স্কুল ও হিন্দুস্তান কেবলসের একটি স্কুলে এই প্রকল্পটি রূপায়ণে তেমন উদ্যোগ হয়নি। প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানান, সরকার প্রকল্পটি ঘোষণা করার পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তা রূপায়ণের জন্য নির্দেশ গিয়েছে। প্রশাসনের অনুমান, এই স্কুলগুলি সরকারি বোর্ড অনুমোদিত হলেও তাদের বেতন রাজ্য সরকার দেয় না। রেলের স্কুলগুলিতে রেল কর্তৃপক্ষ ও হিন্দুস্তান কেবলসের স্কুলটিকে বেতন দেন কেবলস কারখানা কর্তৃপক্ষ। ফলে, রাজ্য সরকারের নির্দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখানোর তেমন তাগিদ স্কুলের তরফে দেখা যায়নি বলে প্রশাসনের একাংশের মত।

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রীদের জন্য এই ধরনের সুবিধা পেতে হলে স্কুলকে ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম অব এডুকেশনে নিবন্ধীকৃত হতে হয়। সেখান থেকে একটি কোড নম্বর নিতে হয়। রেল ও কেবলসের স্কুলগুলি তা করেনি বলে অভিযোগ। এর কারণ কী? চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের অনাগ্রহের কোনও কারণ নেই। ছাত্রীরা সরকারি সুবিধা পাবে, তাতে আমাদের বাধা থাকবে কেন? স্কুলগুলি যাতে সে কাজ করে, তা আমরা কথা বলে ঠিক করছি।’’ হিন্দুস্তান কেবলসের স্কুলটির অধ্যক্ষ সুভাষ বিশ্বাস অবশ্য মেনে নেন, ‘‘এটা কার্যত আমাদের গাফিলতিতে হয়নি। তবে এ বার উদ্যোগী হয়েছি।’’

প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের সালানপুর এলাকার বেশ কয়েকটি স্কুলে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, অনেক ছাত্রী নিয়মিত স্কুলে আসে না। ফলে, তারা সরকারি প্রকল্পটির কথা জানতে পারে না। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তার মতে, স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত ওই ছাত্রীরা কেন স্কুলে আসছে না তা খোঁজ রাখা। তাদের খবর পাঠিয়ে স্কুলে এনে প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশাসনের চিহ্নিত করা এই রকম একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দিরা ঘোষ বলেন, ‘‘ছাত্রীরা স্কুলে নিয়মিত আসছে না বলে তাঁদের নাম পাঠানো যায় না। তবে আমরা সহপাঠীদের দিয়ে খবর পাঠিয়ে তাদের স্কুলে আনার ব্যবস্থা করেছি।’’

চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের স্কুল পরিদর্শক উত্তম মণ্ডল বলেন, ‘‘চিত্তরঞ্জন, কেব্‌লস-সহ সব ক’টি স্কুলকে উদ্যোগী করার ব্যবস্থা হয়েছে। আশা করি, ভাল ফল মিলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol Kanyashree trinamool student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE