Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
বিমা সংস্থাকে নির্দেশ
potato farmers

Farmers: ক্ষতিপূরণের হিসেব কষতে হবে নতুন করে

বৃহস্পতিবার দুপুরে অ্যানেক্সি হলে জেলা পরিষদের কৃষি কমিটির বর্ধিত সভায় বিমা সংস্থার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মেমারি ১ ব্লক অফিস চত্বরে  চাষিদের বিক্ষোভ।

মেমারি ১ ব্লক অফিস চত্বরে চাষিদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২২ ০৭:০৬
Share: Save:

আলু চাষের ক্ষতিপূরণ নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ কাটাতে, ফের কৃষি দফতরকে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সরকারি বিমা সংস্থাকে নির্দেশ দিল জেলা পরিষদ ও কৃষি দফতর নিয়ে গঠিত কমিটি। নতুন করে পর্যালোচনার রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া বন্ধ রাখারও কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে অ্যানেক্সি হলে জেলা পরিষদের কৃষি কমিটির বর্ধিত সভায় বিমা সংস্থার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে, ওই কমিটির সদস্যেরা বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের (পূর্ব বর্ধমান) সঙ্গেও একটি বৈঠক করেন।

জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘কৃষি দফতর আলুর ফলন নিয়ে একটি রিপোর্ট দিয়েছে। তার সঙ্গে বিমা সংস্থার প্রদেয় ক্ষতিপূরণের কোনও মিল নেই। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিমা সংস্থাকে ফের পর্যালোচনা করতে হবে। তত দিন ক্ষতিপূরণ দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে। নতুন রিপোর্ট কৃষি কমিটিতে জমা পড়ার পরে, কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করলে তবেই ফের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।’’

এ দিন মেমারি ১ ব্লকের আলু চাষিরা ঠিকঠাক ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিডিও-র কাছে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, ‘‘যা ক্ষতি হয়েছে, বলে বোঝানো যাবে না। অথচ, ক্ষতিপূরণ মিলছে নাম মাত্র। আবার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা নয় যাঁদের, সে চাষিরা বিমা পাচ্ছেন।’’ বৈঠকে কালনা ২ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের হিসেব তুলে ধরে কী ভাবে বিমার ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, তা দেখান কৃষি আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, ওই ব্লকের সাতগাছি পঞ্চায়েতে আলুর ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা নয়। অথচ, সেখানে ৫.৪ শতাংশ ক্ষতি দেখানো হয়েছে। আনুখাল পঞ্চায়েতে কৃষি দফতরের হিসেবে ৩২ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। অথচ, ক্ষতিপূরণ মিলেছে ৮.৯ শতাংশ। উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) আশিস বারুইয়ের দাবি, ‘‘ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তারাই বিমা সংস্থার কাছে নানা রকম প্রশ্ন রেখেছেন। বিভ্রান্তি কেন ছড়াচ্ছে, তার ব্যাখাও দিয়েছেন। এমন অবস্থা হয়েছে, বিমার প্রিমিয়ামটুকুও চাষির ঘরে যাবে কি না, সন্দেহ দেখা দিয়েছে।’’

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, উপগ্রহ থেকে পাওয়া ফসলের স্বাস্থ্য, সেই সময়ের আবহাওয়ার তথ্যের সঙ্গে মাঠ থেকে পাওয়া ফসলের গুণমান (গ্রাউন্ড ট্রুথ) মিলিয়ে দেখা হয়। ওই দু’টি তথ্যের সামঞ্জস্য রেখেই বিমার ক্ষতিপূরণ নির্দিষ্ট করা হয়। কৃষি দফতরের কর্তাদের দাবি, মাঠে ঘুরে ফসলের গুণমান বার করা হলেও বিমার ক্ষতিপূরণ বার করার সময়ে সে তথ্যের উপরে জোর দেওয়া হয়নি। সামঞ্জস্যে ঘাটতি থাকায় এই বিভ্রান্তি। কালনা ১ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা শুভেন্দু মণ্ডল এ দিন বৈঠকে বলেন, ‘‘আলু হয় মাটির নীচে। উপগ্রহের ছবিতে আলুর সবুজ পাতা দেখা যাবে। তাতে কী মাটির নীচের ফলন বা গুণমান বিচার করা সম্ভব!’’ জামালপুরের সহ-কৃষি অধিকর্তা সঞ্জিবুল ইসলামও বলেন, ‘‘একই ব্লকের পাশপাশি পঞ্চায়েতে বৃষ্টিপাত, ক্ষতি এক হওয়ার পরেও, ক্ষতিপূরণ আলাদা কেন, উত্তর মেলেনি।’’

জেলার সহ-কৃষি অধিকর্তা সুকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিমার ক্ষতিপূরণ নিয়ে নানা রকম গরমিল দেখা যাচ্ছে। আমাদের হিসাবের সঙ্গে বিমা সংস্থার হিসাবের সামঞ্জস্য নেই। বাকি থাকা ২০ হাজারের মতো চাষিকে বিমা দেওয়া বন্ধ রেখে পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে সেই কারণেই।’’ কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল জানান, বুধবারের মধ্যে পর্যালোচনার রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ওই দিন ফের বৈঠক হবে। বিমা সংস্থার রিজিওনাল ম্যানেজার সন্তু দাস বলেন, ‘‘বৈঠক হয়েছে। আমরা বক্তব্য শুনেছি। রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

potato farmers compensation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy