বাসিন্দাদের হাতে আটক অবৈধ কয়লার ট্রাক। ফাইল চিত্র।
খানিক ধরপাকড়ে পন্থা কিছুটা পাল্টেছে। কিন্তু কারবার পুরোপুরি বন্ধের নাম নেই। খাদান থেকে চুরি করে রাতারাতি কয়লা পাচার চলছেই জামুড়িয়ায়। মালবাহী গাড়ির তুলনায় এখন বেশির ভাগটা পাচার হচ্ছে সাইকেল, মোটরবাইক বা গরুর গাড়িতে।
এলাকায় কয়লা পাচারের এমন রমরমা নিয়ে বিরোধী দলগুলি তো বটেই, শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশও সরব হয়েছে। তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন অবশ্য বলেন, ‘‘হঠাৎ জামুড়িয়ার কয়েকটি এলাকায় অবৈধ কয়লা কারবার শুরু হয়েছিল। আমি পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানাই। পুলিশি তৎপরতায় তা খানিকটা কমেছে।’’ পুলিশের দাবি, তল্লাশি চলছে। কয়লা বাজেয়াপ্তও হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, চুরুলিয়ার দু’টি বেসরকারি ও নর্থ সিহারশোল প্যাচ থেকে গভীর রাতে কয়লা তুলে পাচার করা হচ্ছে। জামুড়িয়ার যুব তৃণমূল নেতা সুজয় চট্টোপাধ্যায় জানান, সম্প্রতি সিআইএসএফ নর্থ সিহারশোল প্যাচের সামনে ও রানিসায়র মোড় থেকে কয়েক টন কয়লা বাজেয়াপ্ত করে। স্থানীয় বাসিন্দারাও পাচারের সময়ে কয়লা আটক করে পুলিশ ডেকে ধরিয়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চুরুলিয়ার সরিষাতলির দু’টি বেসরকারি খনি থেকে কয়লা সাইকেল, মোটরবাইক ও গরুর গাড়িতে করে পাঠানো হচ্ছে বাগুলি, রাখাকুরা, গোবিন্দপুর, জয়নগর ও দরবারডাঙার অবৈধ ডিপোয়। নর্থ সিহারশোল প্যাচ থেকে একই ভাবে কয়লা পৌঁছে যাচ্ছে শেখপুর, সেখান থেকে সরবরাহ হচ্ছে ছোটখাট নানা কল-কারখানায়। জামুড়িয়া ও বারবনি লাগোয়া একটি বেসরকারি খনির কয়লা শিবপুরের ডিপোয় এসে জমা হচ্ছে গভীর রাতে। সেখান থেকে জাতীয় সড়ক ধরে পৌঁছে যাচ্ছে এই রাজ্য ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যের নানা এলাকায়।
জামুড়িয়া ১ ব্লক যুব তৃণমূলের কোর কমিটির প্রাক্তন সদস্য তথা আইনজীবী সত্যজিৎ অধিকারীর অভিযোগ, “কয়লার এই রমরমা কারবার চলার পিছনে পুলিশের একাংশেরও হাত রয়েছে। এতে আখেরে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।” জামুড়িয়ার সিপিএম নেতা মনোজ দত্ত আবার দাবি করেন, “শাসকগোষ্ঠীর কেউই চায় না, অবৈধ কয়লার রমরমা বন্ধ হোক। ওদের কোন গোষ্ঠীর কারা এই কারবার নিয়ন্ত্রণ করবে, সে নিয়েই দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছে। শাসকদল না চাইলে পুলিশও কয়লার কারবার বন্ধে নড়ে বসবে না।”
তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন অবশ্য এর সঙ্গে দলের যোগ বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কয়েকটি এলাকায় হঠাৎ কয়লা কারবার শুরু হয়েছিল। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।” পুলিশ জানায়, অভিযান চলছে। কয়লা চুরির অভিযোগে কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy