প্রস্তুতি সারা। শনিবার সিদাবাড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের সীমানায় প্রত্যন্ত গ্রামের দিকে নজর ছিল না কারও। গ্রামের আদিবাসী মানুষজনের স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে খাবার, কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। মাঝে-মধ্যে আসানসোলে যাতায়াতের সুবাদে সেই এলাকার দিকে নজর পড়েছিল তাঁর। দুঃস্থ মানুষজনের জন্য তৈরি করে দিয়েছিলেন ‘শান্তি নিবাস’। মাদার টেরিজা সন্ত হওয়ায় ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া সালানপুরের সিদাবাড়ি গ্রামে তাঁর তৈরি আশ্রমে তাই দিনভর অনুষ্ঠান হবে আজ, রবিবার।
সিদাবাড়ি এলাকায় আদিবাসী মানুষজনের বাস বেশি। এখন এলাকায় খানিকট়া উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও বছর চল্লিশ আগে ছবিটা ছিল পুরোপুরি অন্য রকম। ন্যূনতম পরিষেবারও কোনও ছোঁয়া পৌঁছয়নি তখন, জানাচ্ছেন এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারা। কোনও সূত্রে এই এলাকার দিকে নজর পড়ে মাদারের। ১৯৭৯ সালে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে জমি নিয়ে জনসেবার উদ্যোগ শুরু করে দেন তিনি। তৈরি হয় শান্তি নিবার। বার তিনেক এখানে এসেছেন মাদার। এ ছাড়া নিয়মিত খোঁজ রাখতেন নিবাসের।
এখন ১২ জন সন্ন্যাসিনী রয়েছেন শান্তি নিবাসে। মাদারের আদর্শে কাজ করে চলেছেন তাঁরা। তাঁরা জানান, সরকারের দেওয়া প্রায় ৩৫ একর জমিতে এই আশ্রম গড়ে উঠেছে। সেখানে রয়েছে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ফুল-ফল-সব্জির বাগান, জলাশয়, দুঃস্থ মানুষের থাকার জায়গা, একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। শতাধিক মানুষ সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি। প্রতি দিন অন্তত শ’তিনেক রোগীর চিকিৎসা হয় বহির্বিভাগে। বিহার, ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত নানা এলাকা থেকেও গরিব মানুষজন এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন। রয়েছেন কয়েক জন চিকিৎসক। কুষ্ঠ আক্রান্ত প্রায় দশটি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে আশ্রমে। শ’দেড়েক দুঃস্থ মানুষজন রয়েছেন আশ্রমে। নানা জায়গা থেকে তাঁদের নিয়ে এসে রেখেছেন সন্ন্যাসিনীরা।
শনিবার এই আশ্রমে গিয়ে দেখা গেল, সন্তদের তালিকায় মাদারের নাম যোগ হওয়ার জন্য উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। সাজানো হচ্ছে মাদারের মূর্তি। প্রার্থনা ঘরও সাজিয়ে তোলা হয়েছে। তবে ঘরের ভিতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। রবিবার সকালে প্রার্থনা শুরুর আগে তা খুলে দেওয়া হবে। সন্ন্যাসিনীরা জানালেন, শনিবার রাত জেগে তাঁরা প্রার্থনা করবেন। তাঁদেরই এক জন সিস্টার আশ্রিতা জানান, মাদার সন্ত হচ্ছেন জানার পর থেকেই তাঁরা বিশেষ প্রার্থনার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। আজ, রবিবার ভোর থেকেই তা শুরু হয়ে যাবে। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে। আশ্রমিকদের সঙ্গে যোগ দেবেন আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy