উদ্ধার গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন দিন তিনেক আগে। তার পর থেকে নিখোঁজ দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী। রবিবার উদ্ধার হয়েছে গাড়িটি। কিন্তু শরাফত আলি নামে ওই ব্যবসায়ীর রবিবার রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি, জানায় পুলিশ।
শহরের কবিগুরু এলাকায় থাকেন ওই ব্যবসায়ী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ায় হোটেল, লজ, রেস্তোরাঁর ব্যবসা রয়েছে তাঁরা। এ ছাড়া ধানবাদ-সহ নানা জায়গায় জমির কারবারেও তিনি জড়িত। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ব্যবসার কাজে ‘লিজ’ নেওয়া একটি গাড়িতে করে বেরিয়ে যান। রাত ১১টা থেকে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজেও হদিস না পেয়ে শনিবার রাতে পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
রবিবার সকালে ওই গাড়িটি উদ্ধার হয় শহরের সিটি সেন্টারে চতুরঙ্গ ময়দান লাগোয়া এলাকায়। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় গাড়িটি দাঁড়িয়ে থাকায় সন্দেহ হয় আশপাশের বাসিন্দাদের। পুলিশ জানায়, গাড়িটির ভিতরে একপাটি চপ্পল পাওয়া যায়। পিছনের আসনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল বেশ কিছু কাগজপত্র। ডিএসপি টাউনশিপের বি-জোনের বিদ্যাপতি রোড এলাকার বাসিন্দা অপর্ণা সাহার কাছে গাড়িটি লিজ নিয়েছিলেন শরাফত। রবিবার সকালে তাঁর পরিচিত অটোচালক জানান, গাড়িটি সিটি সেন্টারে পাওয়া গিয়েছে। তাঁর অটোতে চড়েই অপর্ণাদেবী চলে আসেন সেখানে। তিনি জানান, ছ’মাসের জন্য গাড়িটি লিজ নিয়েছেন শরাফত। দু’মাস পেরিয়েছে। তার মধ্যে এক মাসের ভাড়া পেয়েছেন। দ্বিতীয় মাসের ভাড়া দেওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। তিনি বলেন, ‘‘ভাড়া নিয়ে বৃহস্পতিবার ফোনে কথা হয়। শুক্রবার থেকে ফোন বন্ধ। শনিবার ওঁর বাড়িতে এক জনকে পাঠাই। তাঁকে ওঁর স্ত্রী জানান, গাড়ি-সহ তাঁর স্বামী নিখোঁজ।’’
অপর্ণাদেবী জানান, গাড়ির খোঁজ পেয়েই তিনি ব্যবসায়ীর ভাই বাপি শেখকে ফোন করে খবর দেন। ঘটনাস্থলে আসেন বাপি। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘দাদা সে দিন ব্যবসার কাজে প্রায় ১০-১২ লক্ষ টাকা নিয়ে বেরিয়েছিলেন। যে ভাবে গাড়ির ভিতর থেকে একপাটি চপ্পল মিলেছে, কাগজপত্র যে ভাবে পড়ে রয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে টাকার জন্য কেউ তাঁকে অপহরণ করে থাকতে পারে।’’ তবে শরাফতের সঙ্গে কারও কোনও পারিবারিক বা ব্যবসায়িক শত্রুতা রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেননি।
ব্যবসায়ীর স্ত্রী শ্রাবন্তী (দাশগুপ্ত) বেগমের দাবি, হোটেল, লজ, রেস্তোরাঁর ব্যবসা করেন স্বামী। সিটি সেন্টারেই কাউকে টাকা দিতে হবে বলে রাতের খাওয়া সেরে বেরিয়েছিলেন তিনি। কাছাকাছি যাবেন বলে সঙ্গে চালকও নেননি। টাকার জন্য তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে কি না, সে প্রশ্নে শ্রাবন্তী বলেন, ‘‘অন্য কেউ জানবে কী করে, তাঁর কাছে টাকা আছে? কারও সঙ্গে কোনও অশান্তির কথাও শুনিনি। তবে তিনি কোথায় যেতেন, কার কার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল, তা বলতে পারব না।’’ পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ওই ব্যবসায়ী ইদানীং সম্ভবত ছাঁট লোহার কারবারে জড়িয়েছেন। তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘‘বছর দুয়েক বিয়ে হয়েছে আমাদের। দিন কয়েক শুনছি, ছাঁট লোহার কারবার করছেন উনি। ঠিক জানি না।’’ পুলিশ জানায়, সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy