বিলি: বাস ধর্মঘটের কথা জানিয়ে যাত্রীদের লিফলেট। নিজস্ব চিত্র
বেআইনি অটো ও টোটোর দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে আজ, বুধবার থেকে টানা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বাস ও মিনিবাস মালিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, অনেক আবেদন সত্ত্বেও প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। মঙ্গলবারও প্রশাসনের সঙ্গে একটি বৈঠক হয় বাস মালিকদের। কিন্তু সেখানেও কোনও সমাধানসূত্র না মেলায় তাঁরা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে বাস মালিকদের দাবি।
আসানসোল মহকুমায় ১৮৬টি রুটে প্রায় সাড়ে চারশো মিনিবাস ও ২০০ বড় বাস চলাচল করে। কিছু বড় বাস দুর্গাপুর, বর্ধমান-সহ বাঁকুড়া, বীরভুমেও যাতায়াত করে। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লক্ষ যাত্রীর ভরসা এই বাসগুলি। বাস ও মিনিবাসের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রায় তিন হাজার কর্মী। কিন্তু বেআইনি অটোর দাপটের জেরে লোকসান হচ্ছে বলে অভিযোগ বাস মালিকদের। বাসের রুটে অটো চলায় যাত্রী সংখ্যা কমছে। মাথায় হাত পড়েছে বাসকর্মীদেরও।
আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, ২০০০ সালে কলকাতা হাইকোর্টে তাঁরা অবৈধ অটো চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারির আর্জি জানিয়ে মামলা করেন। ২০১৪ সালে এই একই দাবিতে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়। আদালত বেআইনি অটো বন্ধের জন্য পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দেয়। তবু তা বন্ধ হয়নি। প্রায়ই যাত্রী তোলা নিয়ে অটো ও মিনিবাস চালক-কর্মীদের মধ্যে বচসা থেকে মারামারি বেধে যায়।
সমস্যা মেটাতে বাসের মালিক, কর্মী ও অটো চালকদের নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। শেষে গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বৈঠকে ঠিক হয়, মহকুমায় বাসের রুট ছাড়া শহরের অন্য পথে অটো চলবে। বাস মালিকেরা আপত্তি করেননি। প্রশাসনের উদ্যোগে অটোর জন্য ৮২টি রুট ঠিক করে ১৮৭০টি অটোকে অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তার পরে দেড় বছরেও বিষয়টি এগোয়নি। এখনও বাসের রুটে অটো চলছে। প্রতিবাদে মাঝে-মধ্যেই ধর্মঘট ডাকেন বাস মালিকেরা।
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে ফের নড়াচড়া শুরু হয়। শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি আগ্রহী অটো চালকদের নামের তালিকা তৈরি করে ৩০ মে-র মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেন। মিনিবাস অ্যসোসিয়েশনের নেতা সুদীপবাবু বলেন, ‘‘তার পরে দু’মাস কেটে গেলেও সমাধান হয়নি। তাই আমরা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হচ্ছি।’’ আসানসোলের পরিবহণ আধিকারিক মানস হালদার বলেন, ‘‘আমরা পুরসভার কাছে আগ্রহী অটো চালকদের নামের তালিকা চেয়েছি। সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।’’ আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরীর আশ্বাস, ‘‘আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
কর্তারা আশ্বাস দিচ্ছেন। তবে কবে সমস্যা মিটবে, কারও জানা নেই। তাই টানা ধর্মঘটে ভোগান্তির আশঙ্কায় ভুগছেন খনি-শিল্পাঞ্চলের যাত্রীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy