—ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর দাপটে আমন ধানে ক্ষতির আশঙ্কা করেছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষি দফতর। ফসল মাপার পরে কৃষি দফতরের দাবি, গত দু’বছরের চেয়ে এ বার প্রতি হেক্টরে আমন ধানের উৎপাদন বেড়েছে। ফলে, সহায়ক মূল্যে দু’মাস ধরে সরকার ধান কিনতে শুরু করার পরেও খোলা বাজারে ধানের দাম সে ভাবে বাড়ছে না।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে আমন ধানে ক্ষতি হয়। সে বার প্রতি হেক্টরে ৪.৭৩ টন ধান উৎপাদন হয়েছিল। ২০১৮-১৯ সালেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় আমন। তার পরেও ৩,৭৭, ৮১৩ হেক্টর জমিতে ২০ লক্ষ টনের বেশি ধান মেলে। হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ছিল ৫.৩১ টন। এ বার ৩,৭৭,৭১০ হেক্টর জমিতে ২১,১২,৭০৬ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। অর্থাৎ, হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ৫.৫৯ টন।
রাজ্য কৃষি দফতরের সমীক্ষা অনুযায়ী, ‘বুলবুল’-এর ধাক্কায় দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদে ক্ষতি হয়। যদিও পূর্ব বর্ধমানে ক্ষতির পরিমাণ ৩৩ শতাংশের নীচে। জেলা কৃষি দফতরের হিসেবে, জেলার ১৪৬টি পঞ্চায়েতে ১১৪৮টি মৌজা ক্ষতির মুখে পড়েছে। ২,১৮,০১৭ হেক্টর জমির মধ্যে ক্ষতির মুখোমুখি ৪৭,৬০৩ হেক্টর জমি। কৃষি দফতরের দাবি, সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় মেমারি ১ ব্লকে। সেখানে ১০টি পঞ্চায়েতের ১১৮টি মৌজায় ১৪,৬০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জমির ধান ক্ষতির মুখে পড়ে। বর্ধমান সদরের ৮৪টি, কালনার ৪৭টি ও কাটোয়া মহকুমার ১৫টি পঞ্চায়েত ক্ষতির তালিকায় রয়েছে।
জেলায় আমন
• ২০১৭-১৮ সাল: ৪.৭৩ টন।
• ২০১৮-১৯ সাল: ৫.৩১ টন।
• ২০১৯-২০ সাল: ৫.৫৯ টন।
(* প্রতি হেক্টর জমিতে)
জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বুলবুলের প্রভাবে চাষে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছিলেন কৃষকেরা। ফসল তোলার পরে দেখা যাচ্ছে, সে আশঙ্কা অমূলক। আমরা চাষিদেরও সে কথা বুঝিয়েছিলাম।’’ তবে বুলবুলের জন্য মাটি দীর্ঘদিন ভিজে থাকায় আলু চাষ পিছিয়ে গিয়েছে। ফলনে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে কৃষি আধিকারিকেরা মনে করছেন।
আমনের বেশি ফলনের জন্য খোলা বাজারে ধানের দাম নেই, দাবি ‘ধান্য ব্যবসায়ী সমিতি’র। সমিতির রাজ্য নেতা, গলসির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মল্লিকের কথায়, “মোট উৎপাদনের এক চতুর্থাংশ সরকার কিনে নেয়। বাকি ধানের বেশির ভাগ আমরা খোলা বাজারে কিনি। চাহিদা ও জোগানের তালমিল না থাকায় খোলা বাজারে ধানের দাম কম। আবার চালকলগুলিও ধান কিনতে অনীহা দেখাচ্ছে।’’ সরকার সহায়ক মূল্যে প্রতি কুইন্টাল ধান কিনছে ১,৮৩৫ টাকায়। খোলা বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে ১,৫৮০ টাকার কাছাকাছি। ধানের দাম কম হওয়ায় চালের দামও কমেছে খোলা বাজারে। ‘বেঙ্গল রাইসমিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেকের দাবি, “উৎপাদিত চাল খোলা বাজারে অনেক কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় খোলা বাজার থেকে অতিরিক্ত ধান কিনলে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে। সাবধানে পা ফেলতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy