Advertisement
২২ জানুয়ারি ২০২৫
Asfakulla Naiya

আরজি কর আন্দোলনের ‘মুখ’ আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে তদন্তপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিল হাই কোর্ট

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এফআইআর রুজু করে তদন্ত করার মতো উপযুক্ত কোনও তথ্য এবং নথি দেখাতে পারেনি পুলিশ। ছ’সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্টে স্বস্তি আসফাকুল্লা নাইয়ার।

কলকাতা হাই কোর্টে স্বস্তি আসফাকুল্লা নাইয়ার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৩
Share: Save:

পুলিশি তল্লাশি এবং তলবের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া-চিকিৎসক আসফাকউল্লা নাইয়া। সেই মামলায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে তদন্তপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এফআইআর রুজু করে তদন্ত করার মতো উপযুক্ত কোনও তথ্য এবং নথি দেখাতে পারেনি পুলিশ। ছ’সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

সোমবার আসফাকুল্লার আইনজীবী শামিম আহমেদ হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে পুলিশি তলবের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। শামিমের অভিযোগ ছিল, নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই বিধাননগর পুলিশের একটি দল আসফাকউল্লার বাড়িতে তল্লাশি করেছে। পরবর্তী কালে তাঁকে ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় তলবও করা হয়েছে। বিচারপতি ঘোষ মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছিলেন। এর পর বুধবার মামলার শুনানি হল।

গত বুধবার আসফাকুল্লাকে শোকজ় করেছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। পিজিটি (পোস্ট গ্যাজুয়েট ট্রেনি) হয়েও ইএনটি সার্জনের পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। আসফাকুল্লাকে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছিল। এর পরেই গত বৃহস্পতিবার সকালে জুনিয়র ডাক্তারের কাকদ্বীপের বাড়িতে হানা দিয়েছিল বিধাননগর পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের রামতনু নগর এলাকায় আসফাকুল্লার বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে বিধাননগর পুলিশের একটি দল যায়। বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করে নিয়ে যায় তারা। আসফাকুল্লার পরিবারের দাবি, কোনও রকম নোটিস না-দিয়েই এসেছিল পুলিশ। কেন তারা এসেছিল, সে বিষয়েও তাদের কিছু জানানো হয়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে আসফাকুল্লা সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়োবার্তায় বলেছিলেন, ‘‘যে হেতু আরজি কর আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলাম, তাই পুলিশ-প্রশাসন আমাকে ভয় দেখাচ্ছে।’’ আসফাকুল্লার দাদা অলিউল্লাহ নাইয়াও বলেছিলেন, ‘‘বিধাননগর থানার পুলিশ এসে কিছু নথিপত্র নিয়ে গিয়েছে এবং একটা নোটিসও দিয়ে গিয়েছে। এর থেকে বেশি কিছু বলেনি।’’ তার পরেই শুক্রবার আসফাকুল্লাকে তলব করে পুলিশ।

আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ তুলেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স অ্যাসোসিয়েশন। তারা অভিযোগ করেছিল, সিঙ্গুরে একটি স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া সংস্থার বিজ্ঞাপনে আসফাকুল্লা নিজেকে ‘এমএস’ বলে দাবি করেছেন, যা নিয়মবহির্ভূত। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও একই অভিযোগ করেছিলেন গত ১০ ডিসেম্বর। ফেসবুক পোস্টে সেই বিজ্ঞাপনের একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘তলায় সুলভ মূল্যে ফিজিওথেরাপি লেখা আছে। কিন্তু বিনামূল্যে চিকিৎসাটা লিখতে ভুলে গিয়েছে। এ বার থেকে ওখানে যাঁরা যাবেন, কেউ এক পয়সাও দেবেন না।’’

বিতর্ক তখন থেকেই। প্রশ্ন উঠেছিল, কোর্স শেষ হওয়ার আগে আসফাকুল্লা কোন যুক্তিতে নিজের পরিচয়ে ‘এমএস’ লিখতে পারেন? এ বার আসফাকুল্লাকে নোটিস ধরিয়ে সেই বিষয়টি জানতে চাইল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। নোটিসে এ-ও বলা হয়েছে, যথাযথ জবাব না-মিললে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হতে পারে।

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল সূত্রে খবর, অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে আসফাকুল্লার ডাক্তারি ডিগ্রিও কেড়ে নেওয়া হতে পারে। ওই সূত্রই জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিধাননগর পুলিশ কমিশনারের দুই আধিকারিক আসফাকুল্লা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন নিয়ে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরে এসেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের কাছেও ওই জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই ব্যাপারেই তাঁরা খোঁজখবর করতে এসেছিলেন। পুলিশকে সেই সব তথ্যও দিয়েছে কাউন্সিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Asfakulla Naiya R G kar Incident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy