সিটি সেন্টারে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের পুরনো ভাড়াবাড়িতে চলে দুর্গাপুরের আদালত। নতুন ভবনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই মঙ্গলবার দ্রুত কাজ শেষ করার আর্জি জানিয়ে চিঠি দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষকে। সে নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, তিন তলা ওই ভবনের একটি তলায় বেশ কম জায়গায় চলছে দুর্গাপুর আদালত। ঘরগুলি আদালতের কাজকর্মের উপযুক্ত নয় বলে অভিযোগ। আদালতে আসা মানুষজনের বসার জায়গা নেই। আইনজীবীদের জন্য বরাদ্দ ঘরও সঙ্কীর্ণ। সব আইনজীবী এক সঙ্গে বসার জায়গা পান না। অনেকেই বারান্দায় বসে কাজ করেন। সেরেস্তাও চলে বারান্দায়। আদালতের এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতে ভিড় ঠেলতে হয়। ভবনটি পুরনো হওয়ায় মাঝে মাঝেই পলেস্তারা খসে পড়ে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা।
সে কারণে দুর্গাপুরে নতুন আদালত ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই আদালত ভবনের শিলান্যাস করেন কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। তবে নির্মাণ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। ইতিমধ্যে একই ভবনে থাকা মহকুমাশাসকের কার্যালয় সরানো হয়েছে ডিভিসি মোড়ের নতুন ভবনে। কিন্তু আদালত চলছে সেখানেই।
বিধায়ক লক্ষ্মণ অধ্যক্ষকে দেওয়া চিঠিতে জানিয়েছেন, পুরনো ওই ভবনে শৌচালয়, পানীয় জল, বসার জায়গা, পার্কিংয়ের সমস্যা রয়েছে। নতুন আদালত ভবনের কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। কবে তা শেষ হবে, স্পষ্ট নয়। আবার নির্মীয়মাণ ভবনে সেরেস্তার জায়গা রাখা হয়নি। নেই পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। দুর্গাপুর আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অনুপম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নতুন ভবনের কাজ কবে শেষ হবে, তা আমাদেরও জানা নেই। যদি বিধায়ক এ কথা বলে থাকেন, ঠিকই বলেছেন। আমরাও চাই, দ্রুত কাজ শেষ হোক। নতুন ভবনে আদালত স্থানান্তর করা হোক।’’
সংবাদমাধ্যমের একাংশকে বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘নতুন ভবনের কাজ কিছুতেই আর শেষ হচ্ছে না। একই ভবনে থাকা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অথচ, আদালত ভবন চলছে সেখানেই।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এখানকার শাসক দলের মন্ত্রী, বিধায়কেরা এত কথা বলেন। কিন্তু আদালত ভবনের কাজ কেন এগোচ্ছে না? পুরনো
ভবনে যে কোনও সময়ে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে।’’ তাঁর দাবি, দ্রুত পরিস্থিতি না পাল্টালে আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে আদালতের সামনে বিক্ষোভে বসবেন।
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘নতুন আর্থিক বছর শুরু হলেই আদালত ভবনের বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। বিজেপি বিধায়ক নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখার জন্য এ সব বলছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বহু দফতরের বেহাল দশা। তিনি বরং সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান।"
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)