কেরলের পলক্কড়ে খননকার্য চালিয়ে ১০০টিরও বেশি ‘মেগালিথ’ বা বিশালাকার প্রস্তরখণ্ড দিয়ে তৈরি প্রাচীন সমাধির সন্ধান পেল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই)। পলক্কড়ের মালাম্পুঝা বাঁধের কাছে ওই মেগালিথিক কাঠামোগুলির খোঁজ মিলেছে।
নতুন এই আবিষ্কারে উচ্ছ্বসিত পুরাতত্ত্ববিদেরা। বিশালাকৃতি ওই পাথুরে কাঠামোগুলির ছবি সমাজমাধ্যমেও ভাগ করে নিয়েছে এএসআই। এএসআইয়ের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মালাপ্পুঝার কাছে প্রায় ৪৫ হেক্টর জমি জুড়ে খননকার্য চালিয়ে ১১০ টিরও বেশি ‘মেগালিথ’ পাওয়া গিয়েছে। এই কাঠামোগুলি মূলত বিশাল গ্রানাইট স্ল্যাব এবং পাথর দিয়ে তৈরি। কোনও কোনও কাঠামোয় আবার ল্যাটেরাইট পাথরও রয়েছে। ১১০টিরও বেশি মেগালিথ পাশাপাশি বৃত্তাকারে দাঁড় করিয়ে রাখা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। আসলে এগুলি সারিবদ্ধ সমাধি। এগুলির মধ্যে বেশির ভাগ সমাধিই ‘সিস্ট’ জাতীয়। এ ধরনের সমাধির উপরে কোনও আচ্ছাদন থাকে না। চারিদিকে পাথর দিয়ে ঘিরে আয়তাকার কিংবা গোল কক্ষ বানানো হয়। মালাপ্পুঝায় পাওয়া সিস্টগুলির কোনওটি একক কক্ষবিশিষ্ট, কোনওটিতে আবার একাধিক কক্ষ রয়েছে। রয়েছে বৃত্তাকার, কলস আকৃতির, তিনটি পাথর দিয়ে তৈরি ‘ডলমেন’ এবং পাঁচটি পাথর দিয়ে তৈরি ‘ডলমেনয়েড সিস্ট’ও।
আরও পড়ুন:
নতুন এই আবিষ্কার সম্পর্কে এএসআই লিখেছে, ‘‘একসঙ্গে এত বিপুল সংখ্যক মেগালিথিক সমাধিস্তম্ভের আবিষ্কার কেরলের আদি-লৌহ যুগের সময়কার সমাজ এবং জনজীবন সম্পর্কে বিশদে জানতে সাহায্য করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’ উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতেই অন্ধ্রপ্রদেশের কাডাপার লঙ্কামালার জঙ্গল থেকে একটি প্রাচীন শিলালিপি আবিষ্কার করেছিল এএসআই। পাশাপাশি, পাওয়া গিয়েছিল মেগালিথিক অর্থাৎ আদি লৌহ যুগের নানা শিল্পনিদর্শনও। খননকার্য চালিয়ে তিনটি শিলালিপি আবিষ্কৃত হয়। এগুলির মধ্যে কোনওটিতে পশুপাখি আঁকা রয়েছে, কোনওটিতে আবার নানা রকমের জ্যামিতিক নকশা এবং মানুষের মূর্তি আঁকা। খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দ থেকে শুরু করে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে পশুর চর্বি, হাড়ের গুঁড়ো, লাল মাটির মতো নানা প্রাকৃতিক উপকরণ থেকে তৈরি রং দিয়ে এই ছবিগুলি আঁকা হয়েছিল। সেই আবিষ্কারের মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ফের সাফল্য এএসআইয়ের।