Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

বর্ধমানে ‘তথ্য ব্যাঙ্ক’ গড়ছে তৃণমূল

তৃণমূল সূত্রের দাবি, পূর্ব বর্ধমানে যে ক’টি আসনে ভোট হচ্ছে, সেখানে বুথভিত্তিক ব্যবধান বাড়ানোর কথা ভাবছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সে লক্ষ্য পূরণের জন্য জেলায় তৈরি হচ্ছে ‘তথ্য ব্যাঙ্ক’। সে ‘ব্যাঙ্ক’ তৈরির জন্যই বসছে কম্পিউটার।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ০৩:০৭
Share: Save:

শাসকদলের জেলা দফতরে বসছে চারটি কম্পিউটার। সেখানে বসে কাজ করবেন বিশেষজ্ঞ সংস্থার কর্মীরা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এত কিসের তোড়জোড় বধর্মান সদরের কালীবাজারে? তৃণমূল সূত্রের দাবি, পূর্ব বর্ধমানে যে ক’টি আসনে ভোট হচ্ছে, সেখানে বুথভিত্তিক ব্যবধান বাড়ানোর কথা ভাবছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সে লক্ষ্য পূরণের জন্য জেলায় তৈরি হচ্ছে ‘তথ্য ব্যাঙ্ক’। সে ‘ব্যাঙ্ক’ তৈরির জন্যই বসছে কম্পিউটার।

গত পঞ্চায়েত, লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের বুথভিত্তিক ফল থাকবে ‘তথ্য ব্যাঙ্ক’-এ। শাসকদলের অন্দরে কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে, বুথের ফল খারাপ হলে তিরস্কার জুটতে পারে। আবার জয়ের ব্যবধান বিচার করে মিলতে পারে প্রধান বা কর্মাধ্যক্ষের মতো পদও! জেলায় নিজস্ব ‘তথ্যপ্রযুক্তি সেল’ তৈরির প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেই একে দেখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পরিকল্পনার পিছনে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস। মন্ত্রী বলেন, ‘‘সাংগঠনিক প্রয়োজনে এমন পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।’’

গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে জেলায় অর্ধেকের বেশি আসনে তৃণমূল জিতেছে ভোটের আগে। জেলার ১,০১৫টি বুথে কোনও নির্বাচনই হচ্ছে না। কাটোয়া মহকুমা তো পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই পুরোপুরি বিরোধী-শূন্য। তার পরেও এই নীতি নিতে হচ্ছে কেন? তৃণমূলের জেলা স্তরের একাধিক নেতার দাবি, বিনা লড়াইয়ে জয়ের পরে পঞ্চায়েত স্তরের অনেক প্রার্থীরা ‘গা আলগা’ দেন। নেতাদের অনুমান, আত্মতুষ্টির মনোভাব তাঁদের অনেককে গ্রাস করতে পারে। যে ক’টি আসনে ভোট হচ্ছে, সেখানে এই মনোভাব যেন প্রভাব না ফেলে, তাই এই সিদ্ধান্ত। জয়ের ব্যবধান বাড়ানোর জন্য পুরস্কার-তিরস্কার নীতি অবশ্য তৃণমূলে এই প্রথম নয়। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গত বিধানসভা ভোটের আগে বিভিন্ন কর্মিসভায় বলতেন, যে বুথ থেকে ‘লিড’ যত বেশি আসবে, সেই নেতা তত বড় পুরস্কার পাবেন।

যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, ব্যবধান বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত আদতে ‘ভোট লুটের’ ছাড়পত্র। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি উদয় সরকার বলেন, “হুমকির পরেও যাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি, তাঁদের জন্যই এই লুঠ-নীতি।” বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সভাপতি সন্দীপ নন্দীর মন্তব্য, “ভোট লুটের প্রতিযোগিতা হবে। যে যত বেশি লুট করবে, তৃণমূলে তার তত পদোন্নতি!”

অভিযোগ মানেনি শাসকদল। তৃণমূল সূত্রের খবর, অরূপ বিশ্বাস সম্প্রতি তিন দিন ধরে জেলার বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের ব্লক স্তরের পর্যবেক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি ‘তথ্য ব্যাঙ্ক’ তৈরির নির্দেশ দেন। ওই তথ্যের সঙ্গে আসন্ন ভোটের ফলের তুলনামূলক বিচার হবে। সেই বিচারে যাঁরা ভাল ফল করবেন, তাঁরাই পদাধিকারী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE