নির্মীয়মাণ বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
সরকারের টাকায় মাথার উপর পাকা ছাদ মেলার ভরসায় বাড়ি ভেঙে ফেলেছিলেন তাঁরা। পরের বাড়িতে ঠাঁই নিয়ে ঘর তৈরিতে হাত লাগিয়েছিলেন অনেকে। দু’কিস্তির টাকায় বেশ কিছুটা কাজ, কর্তাদের পরিদর্শন করে রিপোর্ট পাঠানোও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরের কিস্তির টাকা না মেলায় মুশকিলে পড়েছেন বাংলা আবাস যোজনার উপভোক্তারা।
দুই বর্ধমানের প্রায় তিরিশ হাজার পরিবার এই সমস্যা ভুগছে। বর্ষা এসে পড়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। কিন্তু কবে, কী ভাবে টাকা পাওয়া যাবে তার উত্তর জেলা প্রশাসনের কাছে নেই। কেতুগ্রামের সালমা বিবি, মনিরুল শেখ , জামালপুরের দাদপুরের পুতুল রায়দের কথায়, ‘‘প্রথম কিস্তির চল্লিশ হাজার টাকা পাওয়ার পরে বাড়ি তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছিলাম। কাজ চলাকালীন ব্লক দফতর থেকে লোক এসে ছবি তুলে, কাজ কী রকম হচ্ছে দেখে গিয়েছেন। কিন্তু পরের কিস্তি আর মিলছে না। কবে পাব তাও বলতে পারছেন না।” ওই উপভোক্তাদের একাংশ পঞ্চায়েতের দেওয়া ত্রিপলে কিংবা অন্যের গোয়াল ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে ধারদেনা করে বাড়ির কাজ কিছুটা এগিয়ে আরও বিপদে পড়ে গিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পে প্রথমে ৪০ হাজার, দ্বিতীয় কিস্তিতে ৩০ হাজার, তৃতীয় কিস্তিতে ৪০ হাজার ও শেষে ১০ হাজার—মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৩১,৪১৯ জনের নাম নথিভুক্ত হয়। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের জন্য রাজ্য জুড়ে তথ্য, নাম ‘আপলোড’ হয় পুজোর পরে। বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা মেলে এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “জানুয়ারিতে বাড়ির টাকা পেয়েছেন, এমন উপভোক্তারা শেষ কিস্তিও পেয়েছেন। তবে আর্থিক বছরের শেষে যাঁরা টাকা পেয়েছেন, তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন। এখন আর কিস্তির টাকা মিলছে না।’’ জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়েছেন ১০,৯৪৯ জন। তৃতীয় ও শেষ কিস্তি পেয়েছেন ২,০৩৫ ও ৩৩ জন। অর্থাৎ প্রথম কিস্তির পরে বাকি টাকা পাননি ১৮,৪০৬ জন। পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুর দাবি, “এই প্রকল্পে কেন্দ্র ও রাজ্য সমান টাকা দেয়। রাজ্য তার অংশ দিলেও কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলেই উপভোক্তারা সমস্যায় পড়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy