Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

গুটখা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি পুরসভার

চিকিৎসকদেরও দাবি, শহরে বেলাগাম পানমশলা আর গুটখা বিক্রির ফলে বাড়ছে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও। শহরের এমন ‘ছবি’ বদলাতে গুটখা ও পানমশলা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল আসানসোল পুরসভা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:১৭
Share: Save:

মোটরবাইক স্টার্ট দেওয়ার আগেই ‘থু থু..’। রঙিন হয়ে গেল রাস্তায় পাশেই থাকা খুঁটির গা।— হরদম এমন দৃশ্য দেখাটাই যেন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে, দাবি আসানসোলবাসীর। চিকিৎসকদেরও দাবি, শহরে বেলাগাম পানমশলা আর গুটখা বিক্রির ফলে বাড়ছে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও। শহরের এমন ‘ছবি’ বদলাতে গুটখা ও পানমশলা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল আসানসোল পুরসভা।

মঙ্গলবার পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘নাগরিক স্বাস্থ্যের দিকে তাকিয়েই এই নিষেধাজ্ঞা। সেই সঙ্গে ৫০ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ব্যবহার, বিক্রি ও মজুত রাখলে জরিমানাও করা হবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিষেধাজ্ঞা লাগু হবে। বিক্রেতাদের পাশাপাশি ক্রেতাদের হাতেও নির্দিষ্ট মাত্রার নীচের প্লাস্টিক দেখলে ২০ টাকা জরিমানা করা হবে বলে পুরসভা জানায়। আর যে সব দোকানদারেরা নির্দিষ্ট মাত্রার নীচের প্লাস্টিক রাখবেন, তাঁদের পাঁচশো টাকা এবং যাঁরা ওই প্লাস্টিক মজুত রাখবেন তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। আবার এ ধরনের প্লাস্টিক তৈরি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর ‘ট্রেড লাইসেন্স’ও বাতিল করা হবে বলে পুরসভা জানায়।

তবে ক্রেতাদের জরিমানার বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, দোকানদার যদি হাতে ওই মাত্রার নীচের প্লাস্টিক হাতে ধরিয়ে দেন তা হলে কী হবে। পুরসভার কর্তাদের অবশ্য দাবি, নাগরিক সচেতনতা তৈরিতেই এই সিদ্ধান্ত।

কিন্তু এমন নিষেধাজ্ঞা কেন? পুরসভার কর্তারা জানান, প্রথমত, নাগরিক স্বাস্থ্য প্রশ্নের মুখে পড়ছে। দ্বিতীয়ত, নব কলেবরে আসানসোল পুরসভা এবং নতুন জেলা হওয়ার পরে থেকেই এই আসানসোল শহরের সৌন্দর্যায়নে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। গুটখা-পানমশলার দৌলতে তাই শহর রঙিন হওয়াটা মোটেই কাম্য নয় বলে বারবার দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশ। তৃতীয়ত, নিয়মনীতি না মেনে প্লাস্টিকের বহুল ব্যবহারের ফলে শহরের নিকাশি-ব্যবস্থাতেও সমস্যা দেখা যাচ্ছে।

পুরসভার এই সিদ্ধান্তকে অবশ্য স্বাগত জানিয়েছেন শহরের চিকিৎসক থেকে সংস্কৃতিকর্মী, সকলেই। আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত জরুরি পদক্ষেপ। পানমশলা, গুটখা ব্যবহারের ফলে গলায় ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে যথেষ্ট বেড়েছে।’’ নাট্যকর্মী স্বপন বিশ্বাসও বলেন, ‘‘এটা ভাল খবর। এর ফলে দৃশ্যদূষণও কমবে।’’ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে পুরসভার এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তও।

অন্য বিষয়গুলি:

Gutka Pan Masala Ban Asansol Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE