—প্রতীকী চিত্র।
গলায় নানা রকমের মালা। পরনে নীল জামা, নস্যি প্যান্ট। চোর সন্দেহে বছর ছাব্বিশের ওই যুবককে গাছে দড়ি ও ওড়না দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চলছে চড়-ঘুষি। এক জন নিরাপত্তা রক্ষীও ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করছেন। এ রকমই একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা দেখে জেলা পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গণপিটুনির অভিযোগ দায়ের করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি শুক্রবার সকালের। ঘটনাস্থল, শক্তিগড় থানার বাম গ্রামের মাঠ পাড়া। পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে থানায় আনে। পুলিশের দাবি, ওই যুবকের কাছ থেকে দু’টি পরিচয়পত্র, দু’টি আধার কার্ড. নেলপালিশ, গ্যাসের বইয়ের মতো জিনিস মিলেছে। তাঁরা যখন ওই যুবককে উদ্ধার করেন, তখন তিনি বাঁধা ছিলেন না বলেও পুলিশ জানিয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি বলে পুলিশের দাবি। মারধরের কথাও জানাননি তিনি। শক্তিগড় থানার দাবি, শনিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই যুবকের পরীক্ষা হবে। তার পরে আদালতে পেশ করা হবে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ওই ভিডিয়ো দেখার পরেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভিডিয়ো দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে তল্লাশি শুরু হয়েছে। আমাদের ধারণা, ওই যুবকের বাড়ি বিহার কিংবা উত্তরপ্রদেশে।”
কয়েক দিন আগে দেওয়ানদিঘির আলমপুরে চোর সন্দেহে মারধর, আটকাতে গেলে পুলিশের উপর আক্রমণে ঘটনায় ১৪ জন গ্রেফতার হয়েছেন। সে দিনই বর্ধমান শহরে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবক ও যুবতীকে মারধর করার অভিযোগে পুলিশ ছ’জনকে গ্রেফতার করে। জেলা পুলিশের তরফে গণপিটুনি রুখতে, আইন হাতে না নিতে প্রচার হচ্ছে। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে সংশ্লিষ্ট থানায় বা পুলিশের কন্ট্রোল রুমে খবর দিতে বলা হচ্ছে। তার পরেও এই প্রবণতা কেন? বাম গ্রামের মাঠপাড়ার মহিলাদের দাবি, গত কয়েক দিন ধরে এলাকায় চুরি হচ্ছে। সাইকেল-গবাদি পশু চুরি হয়েছে। এ দিন সকালে ওই যুবক দড়িতে মেলা শাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। ‘চোর, চোর’ বলে চিৎকার করে উঠলে একটা ঝোপে লুকিয়ে পড়ে। ওঁর ব্যাগে থাকা নথিপত্র দেখে ফোন করা হলে, ওই সব নথি চুরি গিয়েছে বলে জানানো হয়। আরও দুই মহিলার দাবি, “ক্রমাগত চুরির জন্য ক্ষোভ ছিল। কেউ কেউ গায়ে হাত তুলতে পারেন। তবে সে রকম কিছু মারধর হয়নি। বেঁধে রাখা হয়েছিল। পুলিশ আসার আগে ছেড়ে দেওয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy