Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Patient Death at Raniganj

রোগীর মৃত্যু ঘিরে ভাঙচুর নার্সিংহোমে

সূত্রের খবর, মৃতের পরিবারের সঙ্গে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়। ঘটনাচক্রে তার পরেই বিক্ষোভ উঠে যায়।

রানিগঞ্জে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

রানিগঞ্জে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩৪
Share: Save:

রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর চলল রানিগঞ্জে একটি নার্সিংহোমে। বেশ কয়েক ঘণ্টা বিক্ষোভও দেখান মৃতের আত্মীয়েরা। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম লক্ষ্মী হাড়ি (৩৫)। তিনি আসানসোল পুরসভার ২ নম্বর বোরো কার্যালয়ে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করতেন।ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি।

নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, জরায়ুর সমস্যায় ভুগছিলেন লক্ষ্মী। রক্তক্ষরণের জেরে কষ্ট পাচ্ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ অস্ত্রোপচার হবে বলে ঠিক হয়েছিল। মেই মোতাবেক অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনে সংজ্ঞাহীন করতে রোগীর পিঠে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি চলাকালীন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন তিনি। দ্রুত 'ভেন্টিলেশনে' নিয়ে যাওয়া হয় লক্ষ্মীকে। কিন্তু চার ঘণ্টা চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে।

এর পরেই অশান্তি শুরু হয় নার্সিংহোম চত্বরে। অভিযোগ, লক্ষ্মীর মৃত্যুর খবর ছড়াতেই এক দল লোক নার্সিংহোমে চড়াও হন। চিকিৎসককে ঘিরে ধরে অশ্লীল মন্তব্য করতে থাকেন তাঁরা। পাশাপাশি, বহির্বিভাগে ভাঙচুর চালানো হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও ২ নম্বর বোরোর চেয়ারম্যান মোজাম্মেল শাহাজাদা। তাঁদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সূত্রের খবর, মৃতের পরিবারের সঙ্গে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়। ঘটনাচক্রে তার পরেই বিক্ষোভ উঠে যায়। কী অভিযোগে ভাঙচুর চালানো হল, কেন বিক্ষোভ হল, কেনই বা তা তুলে নেওয়া হল, এ নিয়ে মৃতের পরিবার কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘নার্সিংহোমের সঙ্গে আলোচনা করে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়েছে।’’

নার্সিংহোমের কর্ণধারের দাবি, ‘‘প্রথম থেকেই আমরা চাইছিলাম পুলিশ দেহ ময়না-তদন্তে পাঠাক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।’’ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিল না।

পূবর্তন আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) আসানসোল শাখার প্রাক্তন সভাপতি চিকিৎসক শ্যামল সান্যালের দাবি, ‘‘প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কোথাও কোথাও টাকা দিয়ে এ ধরনের সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তাতে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাচ্ছে না। চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠলে দেহের ময়না-তদন্ত বাধ্যতামূলক করা উচিত প্রশসানের। তাতে চিকিৎসক এবং রোগীর পরিবার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারবেন। গাফিলতি প্রমাণ হলে আইন মোতাবেক শাস্তির ব্যবস্থা আছে।’’ তিনি মনে করেন, চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠলে চিকিৎসকদের সম্পর্কে ভুল বার্তা যায়। অভিযোগ ধামাচাপা দিতে অভিযোগকারীদের সঙ্গে আপস-মীমাংসা করে নেওয়া অনুচিত।আইএমএ'র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সমরেন্দ্রনাথ বসুর দাবি, গত এক বছরে রানিগঞ্জে এ ধরনের আপস-মিমাংসার চারটি ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিকে লিখিত আকারে জানাবেন তিনি।

এ নিয়ে ওই নার্সিংহোমের কর্ণধার অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি। বোরো চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘অশান্তির কথা কথা জানতে পেরে নার্সিংহোমে গিয়েছিলাম। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পরে কী ভাবে বিবাদ মিটেছে তা জানা নেই।’’ পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ কোনও কিছুর বিনিময়ে সমস্যা মিটেছে কিনা তা জানা নেই। পুলিশের কাজ শান্তি বজায় রাখা। সেই কাজেই নার্সিংহোমে গিয়েছিল পুলিশ। তবে কোনও অভিযোগ দায়ের হলে পদক্ষেপ করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Raniganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy