Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

এ বার কালনায় মৃত্যু আলু চাষির

মেমারির পর কালনা। ফের এক আলুচাষির আত্মহত্যার অভিযোগ উঠল। মৃত হরিপদ বিশ্বাসের (৪৮) বাড়ি কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের সলঘড়িয়ায়। পরিবারের তরফে দাবি, আলু চাষ করে এ বার তাঁর মোটা অঙ্কের ঋণ হয়ে গিয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০১:১৯
Share: Save:

মেমারির পর কালনা। ফের এক আলুচাষির আত্মহত্যার অভিযোগ উঠল। মৃত হরিপদ বিশ্বাসের (৪৮) বাড়ি কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের সলঘড়িয়ায়। পরিবারের তরফে দাবি, আলু চাষ করে এ বার তাঁর মোটা অঙ্কের ঋণ হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে জুড়েছিল বাড়ি করার ধার। চৈত্র মাসের শুরু থেকে পাওনা টাকার দাবিতে বাড়িতে তাগাদাও দিচ্ছিলেন কিছু লোকজন। সে কারণেই আত্মঘাতী হন। যদিও তেমনটা মানতে চাননি পঞ্চায়েত প্রধান।

বৃহস্পতিবার সকালেই আলু চাষি চন্দন পালের মৃত্যুর খবর সামনে আসে। মেমারির কন্দর্পপুর গ্রামের ওই যুবকের পরিজনদেরও দাবি ছিল, ধার শোধ করতে না পেরেই কীটনাশক খান চন্দন। একই অভিযোগ হরিপদবাবুর ছেলে সুশান্তর। তাঁর দাবি, ‘‘চাষবাস বাবাই দেখতেন। এ বার বিঘে চারেক জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। বিঘে দু’য়েক জমি চুক্তিতে ছিল। বাবার আশা ছিল, আলু বেচে বাড়ির ধার মিটিয়ে দেবেন। তা হয়নি। বরং ঋণের বোঝা বেড়ে যায়। পাওনাদাররা বাড়ি আসতে শুরু করে। বাবা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সে জন্যই চরমপথ বেছে নেন।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত হরিপদবাবুকে বাড়ির আশেপাশেই দেখা গিয়েছিল। সন্ধ্যার দিকে বাড়ির শৌচালয়ে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবার সূত্রের খবর, বিভিন্ন লোকের থেকে ধার নেওয়া ছাড়াও জীবনবিমার পলিসি, সলগড়া সমবায় সমিতি থেকেও ঋণ নিয়েছিলেন। জমি বন্ধক রেখে ঋণ শোধের কথাও ভেবেছিলেন। কিন্তু, কিছুতেই টাকা জোগাড় করতে পারেননি। মৃতের ভাই দীনবন্ধু বিশ্বাস বলেন, ‘‘দেনার দায়ে দাদা একেবারেই মুষড়ে পড়েছিল। ধার কী ভাবে মেটাবে, সে কথাই বারবার বলত। কিন্তু, দাদা শেষ পর্যন্ত এই পথ নেবে ভাবিনি।’’

বাগনাপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান জগবন্ধু পাত্রের অবশ্য দাবি, সাংসারিক অশান্তির জেরেই মৃত্যু হয়েছে হরিপদবাবুর। এই কথা জেনে মৃতের পরিবার ক্ষুব্ধ। প্রশাসন মৃত্যুর ঘটনা লঘু করে দেখাতে চাইছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। বৃহস্পতিবার আলু চাষি চন্দন পালের মৃত্যুকেও প্রশাসনের তরফে পারিবারিক বিবাদ বলে দেখানো হয়েছিল।

এ বার শুরু থেকেই আলুর দাম তলানিতে। লাভ তো দূর, ওঠেনি চাষের টাকাটুকুও। বিঘে প্রতি লোকসান হয়েছে ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা। পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক, তা মেমারি-কালনার আলু চাষিরাও মেনে নিচ্ছেন। তাঁদের কথায়, “প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলুর দাম ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। উৎপাদন খরচই উঠছে না। যত সময় যাবে, দাম আরও কমবে।”

কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান, চাষির পরিবারের তরফে অভিযোগ জমা পড়েনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna Potato Farmer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE