Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Women Football Team

মেয়েদের ফুটবলে এগিয়ে আনছেন প্রাক্তন খনিকর্মী

২০২০ সালে অবসরের পরে জয়ন্ত ঠিক করেন, শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদেরও এগিয়ে আনতে হবে।

অন্ডালের মহিলা ফুটবল দল।

অন্ডালের মহিলা ফুটবল দল। নিজস্ব চিত্র।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৪ ০৯:৫৮
Share: Save:

খনি এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামে মেয়েদের নিয়ে ফুটবল দল গড়েছেন প্রাক্তন ইসিএল কর্মী। সেই মেয়েরা বিভিন্ন জেলায় ফুটবল খেলে রীতিমতো নাম কুড়িয়েছে। তাদের এক জন জেলা ছাড়িয়ে কলকাতার মাঠেও পৌঁছে গিয়েছে। শুধু খেলাধুলো নয়, ওই মেয়েদের নানা প্রয়োজনেও পাশে দাঁড়ান তিনি।

দুর্গাপুরের পরাশকোল কোলিয়ারির প্রাক্তন কর্মী জয়ন্ত রায়ের বাড়ি পরাশকোল গ্রামেই। তিনি বরাবর খেলাধুলো করেন। কর্মজীবনে কোল ইন্ডিয়া এবং দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের হয়ে দেশের নানা প্রান্তে খেলতে গিয়েছেন। ফুটবল ছাড়াও অ্যাথলেটিক্সে পারদর্শী ছিলেন। কর্মজীবনে গ্রামের ক্লাবের ছেলেদের ফুটবল ও অ্যাথলেটিক্স প্রশিক্ষণ দিতেন। তাদের অনেকে সেনা-সহ নানা বাহিনীতে চাকরিও পেয়েছেন।

২০২০ সালে অবসরের পরে জয়ন্ত ঠিক করেন, শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদেরও এগিয়ে আনতে হবে। পরাশকোল ছাড়াও হরিপুর, বহুলা, কাজোড়া, মাধবপুরের মতো নানা গ্রামের মূলত দুঃস্থ আদিবাসী মেয়েদের নিয়ে তিনি ২০২১ সালে গড়ে তোলেন ‘দাদু-নাতি-নাতনি ফুটবল অ্যাকাডেমি’। শিক্ষার্থীরা সবাই তাঁকে ‘দাদু’ বলে ডাকে। মোট ২৬ জনকে তিনি প্রশিক্ষণ দেন। তাদেরমধ্যে ২০ জন আদিবাসী। গড় বয়স ১২-১৮ বছর।

দুর্গাপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, ঝাড়খণ্ডে খেলতে যায় এই অ্যাকাডেমির মেয়েরা। এখনও পর্যন্ত মোট ২৬টি ট্রফি জিতে এনেছে পুষ্পা ওরাং, পায়েল ওরাং, সুস্মিতা ঢাঙর, রেণুকা ঢাঙরেরা। সাইকেল চালিয়ে ওরা মাঠে আসে। ওদের বাবারা কেউ দিনমজুর, কেউ ইটভাটায় কাজ করেন, কেউ আবার কোনও কারখানায় ছোটখাটো কাজ করেন। বাড়িতে আর্থিক অস্বচ্ছলতা সত্ত্বেও মেয়েদের প্রতিদিন ফুটবল প্রশিক্ষণ নিতে পাঠান তাঁরা। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে শুরু হয় প্রশিক্ষণ। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। রোদ, ঝড়, বৃষ্টিতেও তা বন্ধ হয় না।

প্রতিমা ঢাঙরের বাড়ি দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগে। এক আত্মীয়ের বাড়ি পরাশকোলে। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে পরাশকোলে গিয়ে ওই অ্যাকাডেমিতে সমবয়সী মেয়েদের প্রশিক্ষণ নিতে দেখে সে-ও যুক্ত হয়ে পড়ে। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে। গত ছ’মাস ধরে কলকাতা লিগে খেলছে প্রতিমা, জানান জয়ন্ত। সুপর্ণা কোড়া, নিশা হেমব্রমেরা বলে, “খাবার, পোশাক, ওষুধ, স্কুলের খরচ, টিউশন— যে কোনও কিছুতে আটকে গেলে দাদুই আমাদের ভরসা। সব সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।”

জয়ন্ত জানান, অ্যাকাডেমি চালাতে গ্রামবাসী এবং ইসিএল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পান। আদিবাসী পাড়ার যে মাঠে আগে অনুশীলন হত, তা ধসের কবলে পড়েছে। পরাশকোলের ইসিএলের স্টেডিয়ামও ধস কবলিত হওয়ায় খেলার উপযুক্ত নয়। তাই এখন অন্য একটি মাঠে মেয়েদের নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ফুটবল খেলা।

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur ecl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy