প্রতীকী চিত্র
দৃষ্টিহীন বৃদ্ধাকে রাতে তুলে নিয়ে গিয়ে রেললাইনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল মেমারিতে। এগারো দিন পরে, বুধবার বিষয়টি জানাজানি হয়। মেমারির এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতে বর্ধমান রেল পুলিশ ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছে। ওই বৃদ্ধা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার বর্ধমানে ঘটনার তদন্তে যান রেল পুলিশের ইনস্পেক্টর (দুর্গাপুর) জয়জিৎ লোধ। তিনি ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য, অভিযোগকারিণীর সঙ্গে কথা বলেন। রেল পুলিশের তদন্তকারী অফিসার বৃদ্ধার বয়ান নথিভুক্ত করেন। রেল পুলিশ সূত্রের দাবি, বৃদ্ধা তাদের জানিয়েছেন, গলা শুনলে হামলাকারীকে চিনতে পারবেন। রেল পুলিশের সুপারিন্টেন্ডন্ট (হাওড়া) কে করনন বলেন, ‘‘সমস্ত নিয়ম-কানুন মেনে বৃদ্ধাকে কোনও হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
রেল পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে ওই মহিলা মেমারি স্টেশনের ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে থাকেন। কখনও স্টেশন মাস্টারের ঘরের পিছনেও তাঁকে থাকতে দেখা গিয়েছে। মেমারির ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য কবিতা চক্রবর্তী দাবি করেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই বৃদ্ধাকে নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে অনেকে সরব হয়েছিলেন। আমাদের এক সদস্য তা দেখে বিষয়টি জানান। আমরা বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তাঁর বয়স ৭৬ বছর। তিনি দৃষ্টিহীন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বৃদ্ধা আমাদের জানান, ৬ জুন গভীর রাতে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনাটি প্রশাসনকে জানানো কর্তব্য বলে মনে করেছি।’’
রেল পুলিশের ইনস্পেক্টর (দুর্গাপুর) জয়জিৎবাবু বলেন, ‘‘ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। এক জনই হামলাকারী ছিল বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন সূত্র কাজে লাগানো হয়েছে। প্রয়োজনে জেলা পুলিশের সাহায্য নেব। আশা করছি, হামলাকারী ধরা পড়বে।’’ বছর দু’য়েক আগে বর্ধমান স্টেশনে চা খাওয়ানোর নাম করে বছর সত্তরের এক বৃদ্ধাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে। কিন্তু দোষী এখনও অধরা।
রেল পুলিশের দাবি, ওই বৃদ্ধা তাদের জানিয়েছেন, হিন্দিভাষী এক জন প্রথমে তাঁর কাপড়-চাদর ধরে টানে। তিনি উঠে চিৎকার শুরু করায় গলা টিপে ধরে। কিছুক্ষণ পরে তার কথামতো সঙ্গে যেতে বলে। এর পরে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির পিছনে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে, অভিযোগ বৃদ্ধার। কাউকে কিছু জানালে খুনের হুমকিও দেয় বলে বৃদ্ধা জানিয়েছেন, দাবি রেল পুলিশের।
রেল পুলিশ সূত্রের দাবি, তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর দিন স্টেশনের কয়েকজনকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন বৃদ্ধা। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়নি। বুধবার স্টেশনে খাবার বিলি করতে যাওয়া এক প্রাক্তন সেনাকর্মীকে বৃদ্ধা জানান, তিনি স্টেশনে থাকতে চান না। এর কারণ জানতে চেয়েই ঘটনার কথা জানা যায়। ওই ব্যক্তি পরিচিত কয়েকজনকে বিষয়টি জানান। সেখান থেকে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’র মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে খবরটি পৌঁছয়।
এ দিন বীরভূমে যাওয়ার পথে বর্ধমানে দলের পার্টি অফিসে এসে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এই ঘটনার নিন্দা করেন। রাজ্যে বারবার মহিলাদের উপরে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলেও অভিযোগ তাঁর।
বৃহস্পতিবার বৃদ্ধা বলেন, ‘‘৭৬ বছর বয়সে আমার সঙ্গে কেউ এ রকম করতে পারে, ভাবতে পারিনি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy