অভিযানের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
রেলের জমি থেকে দখল উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে সোমবার তেতে উঠল বরাকর। রেলের আধিকারিক এবং আরপিএফকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাতে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সমস্যা মেটাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার। দখল উচ্ছেদ বন্ধের জন্য হস্তক্ষেপ চেয়ে জেলাশাসকের দফতরে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। বিক্ষোভে পড়ে আরপিএফ এবং রেলের আধিকারিকেরা এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে বিজেপি-তৃণমূলের বিতণ্ডা।
বরাকরের বালতোড়িয়া, মসজিদপাড়া, কালিধাওড়া, ১২ নম্বর লোকোলাইন এলাকায় রেলের জমিতে প্রায় তিনশো পরিবার বহু বছর ধরে বাস করছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বরাকরের বালতোড়িয়া এলাকায় আরপিএফ বাহিনী এই উচ্ছেদ অভিযানে নামে। নামানো হয় চারটি ড্রোজ়ার। রেলের তরফে জানানো হয়, এলাকার পুরো জমিই রেলের। বহিরাগতেরা অবৈধ নির্মাণ গড়ে বাস করছেন। রেলের প্রকল্প রূপায়ণের জন্য এই জমি কাজে লাগানো হবে। তাই দিন পনেরো আগে দখলদারদের নোটিস দিয়ে জমি ছাড়ার অনুরোধ করা হয়েছে। ওই নোটিসেই উল্লেখ রয়েছে, কেউ স্বেচ্ছায় উঠে না গেলে ৫ জানুয়ারির পরে যে কোনও দিন নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার উচ্ছেদ অভিযানে নামেন রেলের আধিকারিকেরা। মোতায়েন করা হয় শতাধিক আরপিএফ কর্মীকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নোটিস পেয়েও এলাকা ছাড়েননি দখলদারেরা। স্থানীয় বাসিন্দা ছোটু রুইদাস, গোবিন্দ কেওটরা বলেন, ‘‘পুনর্বাসন ছাড়া আমরা এলাকা ছেড়ে যাব না।’’ সোমবার উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়টি আঁচ করে বিক্ষোভে নামেন বাসিন্দারা। নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের কুলটি ব্লক সভাপতি কাঞ্চন রায়। আরপিএফকে নিয়ে রেলের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। কাঞ্চনের দাবি, ‘‘রাতারাতি উচ্ছেদ করে দেব বললেই হয় না। কয়েক দশক ধরে বাস করছেন এই বাসিন্দারা। তাঁদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।’’ তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি রাজ্যের মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ না হলে টানা আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি তাঁর। আরপিএফের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
ইতিমধ্যে এলাকায় পৌঁছন কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার। তাঁকে দেখে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আরও ক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অজয় রেলের আধিকারিক ও আরপিএফের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এর পরে এ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করা হয়। তবে অজয় বলেন, ‘‘শুধু রেলের জমি দখল হয়ে থাকায় রাজ্য জুড়ে প্রায় ন’টি প্রকল্প আটকে রয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এই বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার দায় রেলের নয়। রাজ্য সরকার ওঁদের খাস জমিতে বাড়ি তৈরি করে দিক।’’
বরাকরের এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জেলাশাসকের দফতরে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি রবি যাদবের দাবি, ‘‘এই ঠান্ডার মধ্যে রাতারাতি বেঘর করার চেষ্টা হচ্ছে বাসিন্দাদের। রেলের সঙ্গে কথা বলে এই অভিয়ান বন্ধ করানোর জন্য জেলাশাসকের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy