প্রতীকী ছবি।
তাঁরা করোনা-আক্রান্ত। পড়শিরা ‘চাপ’ দিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি হতে। হাসপাতাল ভর্তি নেয়নি। এমনই অভিযোগ পশ্চিম বর্ধমানের ইস্কোর বার্নপুর হাসপাতালের দুই অস্থায়ী সাফাইকর্মীর। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ওই হাসপাতালেই ভর্তি হতে চেয়ে জরুরি জিনিসপত্র সঙ্গে করে বহির্বিভাগের দরজার সামনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় ১৮ ঘণ্টা অবস্থান করলেন। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার দুপুরে তাঁদের একটি ‘সেফ হোম’-এ পাঠানো হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বার্নপুরের নরসিংহবাঁধের বাসিন্দা, বছর ৫০-এর এক পুরুষ ও প্রায় সমবয়স্ক এক মহিলা সাফাইকর্মী কয়েকদিন আগে আসানসোল জেলা হাসপাতালে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করান। গত ৩ অগস্ট তাঁদের ‘কোভিড পজ়িটিভ’ রিপোর্ট আসে। কিন্তু উপসর্গ না থাকায় তাঁদের বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। তাঁরা বাড়িতেই ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, পড়শিরা তাঁদের বাড়ির বদলে হাসপাতালে যেতে ‘চাপ’ দেন।
কেন ‘চাপ’ দেওয়া হল? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ‘‘সংক্রমণের বাড়াবাড়ি হচ্ছে। সাবধানতার কারণেই ওঁদের হাসপাতালে যেতে বলি।’’ বৃহস্পতিবার রাত ৭টা নাগাদ ওই দু’জন বাড়ি থেকে হেঁটে শ’তিনেক মিটার দূরের বার্নপুর হাসপাতালে ভর্তি হতে যান। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ভর্তি নেননি এই অভিযোগ করে, দু’জনেই হাসপাতালের বহির্বিভাগের দরজার সামনে অবস্থানে বসে পড়েন।
ঘটনাস্থলে শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, রীতিমতো চাদর-সহ নানা জিনিসপত্র এবং ব্যাগ গুছিয়ে তাঁরা মেঝেয় বসে রয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের অভিযোগ, ‘‘আমরা করোনা-আক্রান্ত জেনে পড়শিরা বাড়িতে থাকতে দিতে চাননি। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু এখানে ভর্তি নেওয়া হয়নি।’’ ওই দু’জন কোভিড-আক্রান্ত জানাজানি হতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য রোগী ও পরিজনদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়ায়।
ভর্তি কেন নেওয়া হল না? ইস্কোর ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল হেলথ রিণ্টু গুহনিয়োগীর দাবি, ‘‘এই হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা হয় না। ফলে, অন্য রোগীদের কথা ভেবে তাঁদের ভর্তি করা যায়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। ওঁরা উপসর্গহীন বলে ইস্কোর সেফ হোমে রেখে প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলা হয়েছিল। তাঁরা প্রাথমিক ভাবে রাজি হননি।’’
ওই দুই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি না করার প্রতিবাদে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন অন্য সাফাইকর্মীরাও। বিপাকে পড়েন অন্য রোগীরা। দুপুর ১টা নাগাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন। দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ ওই দু’জনকে রিভারসাইডে ইস্কোরই একটি ‘সেফ হোম’-এ নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে কাজে যোগ দেন অন্য সাফাইকর্মীরাও। ঠিকা সংস্থাটির তরফে জানানো হয়, ওই দু’জনকে বেশ কিছুক্ষণ ধরে চিকিৎসা বিধির কথা বোঝানোর পরে, তাঁরা ‘সেফ হোম’-এ যেতে রাজি হন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, দুই সাফাইকর্মীর পরিবারের অন্যদের বাড়িতেই নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সরবন সাউ বলেন, ‘‘গোটা এলাকায় জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়েছে। এলাকায় সচেতনতা- প্রচার চালানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy