দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত আদালতের তাড়ায় নড়ে বসল পুরসভা। শহরে অস্বাস্থ্যকর সমস্ত শৌচাগার উচ্ছেদে অভিযান শুরু হল আসানসোলে। প্রাথমিক ভাবে ১১ থেকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এই কাজ শুরু হয়েছে। বাড়ির মালিকদের বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে শৌচাগার তৈরির জন্য আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
২০০৭ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দেয়, কোনও শহর এলাকায় অবৈজ্ঞানিক উপায়ে তৈরি শৌচালয় রাখা যাবে না। কিন্তু তার পরেও আসানসোল পুর এলাকার একাধিক ওয়ার্ডে কয়েকশো খাটা শৌচালয় রয়ে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়। পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা শহরের প্রাক্তন মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সুপ্রিম কোর্ট তার সর্বশেষ নির্দেশে জানিয়েছে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শহর এলাকার এই সব শৌচাগার উচ্ছেদ করতে হবে। তাই তার আগেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে এই শহরে। তবে শুধু উচ্ছেদ করেই কাজ শেষ হবে না। বিকল্প হিসেবে বিজ্ঞানসম্মত শৌচালয় তৈরির ব্যবস্থাও করে দিতে হবে। তাপসবাবু জানান, এই উচ্ছেদ অভিযানের রূপরেখা তৈরি করতে সম্প্রতি একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করা হয়। সমীক্ষা চালিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ দেখেছেন, ৪, ১০-১৪, ২৬-২৯ এবং ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে বেশি অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার আছে।
তাপসবাবু জানান, এই সব শৌচাগারের জন্য শহরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এই ব্যবস্থা চালু থাকা যে কোনও শহরের লজ্জা। তাপসবাবু বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরাও বারবার বিব্রত হচ্ছি। এই ধরনের সব শৌচাগার তুলে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তৈরির অভিযান শুরু হয়েছে।” তিনি আরও জানান, ১১ থেকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৪০টি বিজ্ঞানসম্মত শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া শহরে বেশ কয়েকটি সাধারণ শৌচাগার গড়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেড় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলা হবে বলে তাপসবাবুর দাবি।
পুরসভার প্রশাসক তথা আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত জানান, আগে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে শৌচাগার গড়ার জন্য সরকারি আর্থিক অনুদানের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২০ হাজার টাকা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত বাড়ির মালিক ও ভাড়াটেদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরে শহরের বেশ কিছু এলাকায় শৌচাগার উচ্ছেদ করতে গিয়ে বাধা পাচ্ছেন পুরকর্মীরা। আবার অনেক বস্তি এলাকায় পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার জন্যও বিজ্ঞানসম্মত শৌচাগার নির্মাণ করা যাচ্ছে না। তবে কোনও রকম বাধার মুখে কাজ বন্ধ রাখা হবে না বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy