এডিডিএ-র হোর্ডিংয়ে সিপিএমের প্রচার।
সরকারি হোর্ডিং ভাড়া নিয়ে দুর্গাপুরে নির্বাচনী প্রচার করছে সিপিএম। এ ভাবে প্রচারের নজির এই শহরে এই প্রথম, দাবি সিপিএমের।
শহরের অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত বিধাননগর। বাসিন্দাদের বড় অংশই চান না, তাঁদের বাড়ির দেওয়াল ভোট প্রচারে ব্যবহার করুক কোনও রাজনৈতিক দল। পাশে ফুলঝোড়, অমরাবতী এলাকায় শাসকদল দেওয়াল লিখন মুছে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এই সব এলাকায় তাই সরকারি হোর্ডিং ভাড়া নিয়ে ব্যানার লাগানো হচ্ছে, এমনটাই দাবি সিপিএমের। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, মানুষ চাইছেন না সিপিএমকে দেওয়াল দিতে। তাই বাধ্য হয়ে অন্য রকম যুক্তি খাড়া করছে তারা।
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত এডিডিএ-র লিজ দেওয়া হোর্ডিং তাঁরা বিভিন্ন এজেন্সির কাছে ভাড়া নিচ্ছেন। এখন থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ভাড়া গুণতে হবে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা করে। তবু এই পথ নিয়েছে সিপিএম। কেন? দলের নেতারা জানান, বাড়ির দেওয়াল জুড়ে প্রচার করুক কোনও রাজনৈতিক দল, তা চান না অনেকেই। সে কথা দলের নেতাদের অনেকে জানিয়েছেন। বাসিন্দাদের সেই ইচ্ছাকে সম্মান দিতে তাই ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিধাননগর এলাকার কোনও বাড়ির দেওয়ালে প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। দলের এক নেতার দাবি, নির্বাচনের পরে দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়ার পরেও তা আর আগের অবস্থায় ফেরে না। বাড়ির মালিক বিরক্ত হন। সে কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলঝোড়, অমরাবতী ইত্যাদি এলাকায় সিপিএমের দেওয়াল লিখন মুছে দিয়ে সেখানে তৃণমূলের প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। বাধ্য হয়ে সেখানেও বিধাননগরের মতো সরকারি হোর্ডিং ভাড়া নিয়ে প্রচারের পথে যেতে হচ্ছে বলে জানান সিপিএম নেতারা।
সরকারি ভবনে তৃণমূলের ফেস্টুন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে জানান, কোথাও দেওয়াল নোংরা হবে বলে বাড়ির মালিক দেওয়াল দিতে রাজি হচ্ছেন না। কোথাও আবার ‘বিড়ম্বনা’ এড়াতে শাসকদলকেই দেওয়াল লিখতে দিচ্ছেন বাড়ির মালিক। সে কথা জানিয়েও দিচ্ছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছে সিপিএম। তাই সরকারি হোর্ডিং ভাড়া নিয়ে প্রচারে নামতে হচ্ছে তাদের। দলের বিধাননগর-জেমুয়া লোকাল সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকারের অবশ্য দাবি, “এ কথা ঠিক নয়। বিধাননগরের ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকের স্বার্থেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের সন্ত্রাসের মোকাবিলার জন্য এ ভাবে ভাবতে হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, ২৪ মার্চ নির্বাচন কমিশনের বিধি-নিষেধ অগ্রাহ্য করে তৃণমূল বিধাননগর এলাকায় বাইক মিছিল বের করে। অমরাবতী এলাকায় সিপিএমের দেওয়াল লিখন মুছে দিয়ে নিজেদের প্রচার করছে তৃণমূল। সেখানে সিপিএমের দলীয় মুখপত্রের বোর্ডে সেঁটে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের মুখপত্র। সরকারি আবাসন ভ্যাম্বে কলোনির দেওয়ালেও দেওয়াল লিখন করেছে তৃণমূল। সব বিষয় নির্বাচন কমিশনকে লিখিত ভাবে তাঁরা জানিয়েছেন বলে দাবি পঙ্কজবাবুর।
তৃণমূল অবশ্য সিপিএমের দাবি মানতে নারাজ। দলের নেতাদের দাবি, বাড়ির মালিকের কাছে নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়েই তাঁরা দেওয়াল লিখছেন। জোর করে কোথাও দেওয়াল লিখনের পক্ষপাতী নন তাঁরা। দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “দেওয়াল লিখন হচ্ছে নিয়ম মেনে। বাড়ির মালিক যদি সিপিএমকে দেওয়াল দিতে রাজি না হন বা সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা হতাশা থেকে দেওয়াল না লেখেন, আমাদের কী করার আছে?” তিনি জানান, ভোট শেষে তাঁরা নিয়ম মেনেই দেওয়াল মুছে দেবেন।
ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy