Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

খরচ চালাতে কাজ করে আয়, ব্যবস্থা পড়ুয়াদের জন্য

দুঃস্থ পড়ুয়াদের কথা ভেবে পড়াশোনা করার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিভিন্ন কাজকর্ম করে রোজগারের ব্যবস্থা করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়াশোনার খরচ, হস্টেলে থাকার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে বহু পড়ুয়াই সমস্যায় পড়েন। অন্য দিকে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু কাজ বাইরের লোকজনকে দিয়ে করাতে হয়। সেই সমস্ত কাজ পড়ুয়াদের দিয়ে করিয়ে উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৪৫
Share: Save:

দুঃস্থ পড়ুয়াদের কথা ভেবে পড়াশোনা করার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিভিন্ন কাজকর্ম করে রোজগারের ব্যবস্থা করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়াশোনার খরচ, হস্টেলে থাকার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে বহু পড়ুয়াই সমস্যায় পড়েন। অন্য দিকে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু কাজ বাইরের লোকজনকে দিয়ে করাতে হয়। সেই সমস্ত কাজ পড়ুয়াদের দিয়ে করিয়ে উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রকল্পটি চালু হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে। উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই উদ্যোগ আগে দেখেছি। তবে আমাদের রাজ্যে তা এই প্রথম।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান ছাড়াও পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার বহু পড়ুয়া এখানে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করে থাকেন। সব জেলা থেকেই বেশ কিছু পড়ুয়া আসেন, যাঁদের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তফসিল জাতি বা উপজাতিভুক্ত পড়ুয়ারা কিছু সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও বাকিরা তা পান না। ফলে, পড়াশোনার খরচ, হস্টেলে থাকার খরচ নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাঁদের অনেককে। তাতে পড়াশোনারও ক্ষতি হয়। অনেকে টিউশন করে রোজগারের চেষ্টা করেন। কিন্তু পেশাদার পাঠ্যক্রমের পড়ুয়াদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যেতে হয় মাঝে-মাঝেই। ফলে, তাঁরা ইচ্ছে মতো টিউশনও করতে পারেন না। পড়ুয়াদের এই ধরনের সব সমস্যা মেটাতেই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে আসা হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর।

পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে কী কাজ করবে পড়ুয়ারা? বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, প্রতি বছর ভর্তির সময়ে হাজার-হাজার ফর্ম জমা পড়ে। সেই সমস্ত ফর্ম বাছাই ও ডেটা প্রসেসিংয়ের বহু কাজ থাকে। বইপত্র, ম্যাগাজিন, গবেষণাপত্র যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল গ্রন্থাগার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। এ ছাড়া ক্যাম্পাস পরিষ্কার রাখার মতো কাজও আছে। এই সমস্ত কাজকর্ম মূলত বাইরের লোক দিয়ে করানো হয়। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট বাজেট থাকে। স্নাতকোত্তর পড়াকালীন পড়ুয়াদের দিয়েই সেই সব কাজ করিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ হয়েছে।

উপাচার্য জানান, প্রথমে পর্যায়ে ক্যাম্পাস পরিষ্কার, ডেটা প্রসেসিংয়ের মতো কিছু কাজ করানো হবে। তাতে পড়ুয়ারা যেমন আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন। অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একাত্মতাও বাড়বে তাঁদের। তাঁর কথায়, “নিজে ঘর গুছিয়ে রাখলে নোংরা করার প্রবণতা অনেক কমে যায়। প্রথমে হয়তো অনেককে এক সঙ্গে কাজ দিতে পারব না। তবে সময়ের সঙ্গে আশা করি তা দেওয়া সম্ভব হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, এই বিষয়টি নিয়ে প্রতিটি বিভাগকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। ইচ্ছুক পড়ুয়ারা বিভাগীয় প্রধানের মারফত রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন জানাতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে শুধু যে দুঃস্থ পড়ুয়াদের কথাই বিবেচনা করা হবে, এমন নয়। প্রত্যেক পড়ুয়াই কাজের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন। দু’টি পিরিয়ডের ফাঁকে বা ছুটির দিনে কাজ করতে পারবেন পড়ুয়ারা। কেউ চাইলে সকালে ক্লাস শুরুর আগে বা বিকেলে ক্লাস শেষের পরেও কাজ করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, “পড়াশোনার কোনও ক্ষতি না করেই কাজ করতে পারবেন পড়ুয়ারা। সে ভাবেই বিষয়টি ভাবা হয়েছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE