Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

আধার নম্বরে লোপাট টাকা, চিন্তা প্রশাসনে

গত ২৪ অগস্ট গোপালপুরে এক আদিবাসী পরিবারের কাছে গিয়ে এক যুবক নিজেকে জেলা প্রশাসনের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

উড়ো ফোনে যদি ব্যাঙ্ক-কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে কেউ অ্যাকাউন্ট বা ডেবিট কার্ডের নম্বর জানতে চায়, তা হলে অনেকে সতর্ক হয়ে যান। কিন্তু ব্যাঙ্কের কোনও তথ্য জানতে না চেয়ে, শুধু আধার কার্ডের নম্বর ও আঙুলের ছাপ নিয়ে এক আদিবাসী পরিবারের কয়েক জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সরানো হয়েছিল টাকা। বাঁকুড়ার ওন্দার গোপালপুরের ওই ঘটনার তদন্তে নেমে জেলারই কেঞ্জাকুড়ার এক যুবককে ধরেছে পুলিশ। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘ওই যুবক একটি ব্যাঙ্কিং পরিষেবার অপব্যবহার করেছিল।’’

গত ২৪ অগস্ট গোপালপুরে এক আদিবাসী পরিবারের কাছে গিয়ে এক যুবক নিজেকে জেলা প্রশাসনের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে। সেই সুবাদে পরিবারের কয়েক জনের আধার কার্ডের নম্বর চায়। সঙ্গে ছিল একটি যন্ত্র। তাতে হাতের বুড়ো আঙুলের ছাপ নেয় সে। যুবক চলে যাওয়ার পরে, পরিবারের সদস্যেরা টের পান, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২২ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ৩০ অগস্ট বাঁকুড়া সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে নেমে ৩ অক্টোবর প্রতারণার অভিযোগে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার রাকেশ কর্মকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে আপাতত জেল হাজতে।

ব্যাঙ্কে না গিয়ে বাড়িতে বসে টাকা তোলার একটি পদ্ধতি হল ‘মাইক্রো ব্যাঙ্কিং’। সে ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাছে হাজির হন ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা। ‘এইপিএস’ বা ‘আধার ইনেবলড পেমেন্ট সিস্টেম’-এর মাধ্যমে তাঁরা গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে দেন বা অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেন। অনেক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক এই পরিষেবা দেয়। কিছু সংস্থা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ব্যাঙ্কের সঙ্গে গ্রাহকের লেনদেন করানোর কাজ করে। রাকেশ তেমনই একটি ‘তৃতীয় পক্ষ’ সংস্থার প্রাক্তন এজেন্ট। পুলিশ ওই সংস্থার সূত্রেই নাগাল পায় রাকেশের।

পুলিশ সুপার জানান, রাকেশ যে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল, সেটির কত জন এজেন্ট বাঁকুড়ায় রয়েছেন সে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। জেলার লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সঞ্জিত নন্দী বলেন, “অধিকাংশ ব্যাঙ্কেই ‘আধার ইনেবলড পেমেন্ট সিস্টেম’ চালু রয়েছে। চাইলেই এ পদ্ধতি বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে সমস্ত মহল থেকে গ্রাহকদের সচেতন করার চেষ্টা হতে পারে।”

প্রত্যন্ত এলাকায় গ্রাহকদের সচেতনতার অভাবকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের প্রতারণার জাল ছড়াতে পারে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত জেলা প্রশাসনও। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক শঙ্কর নস্কর বলেন, “প্রশাসনিক কর্মী সেজে কেউ যাতে এ ভাবে ঠকাতে না পারে, সে জন্য পঞ্চায়েতের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার বিষয়ে ভাবছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Aadhar Card Fraud Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy