Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Lalgarh

বাঘ হত্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বকেই চ্যালেঞ্জ বন দফতরের রিপোর্টে

স্থানীয় বন সুরক্ষা কমিটির ভূমিকাতেও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যদের কাছে বাঘের আনাগোনা এবং স্থানীয়দের শিকারের পরিকল্পনার কোনও খবর ছিল না।

এই সেই মৃত বাঘ। ফাইল চিত্র।

এই সেই মৃত বাঘ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৮ ১৭:০৭
Share: Save:

শিকার উৎসব বন্ধ করতে পারলে বাঁচানো যেত লালগড়ের বাঘটিকে। এই তথ্যই উঠে এল রাজ্য বনদফতরের বিভাগীয় তদন্তে। সোমবার বন দফতরের প্রধান সচিব চন্দন সিংহকে জমা দেওয়া মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহর এই রিপোর্ট ফের উস্কে দিল বিতর্ক। কারণ, লালগড়ের বাঘের মৃত্যুর পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গাঁধী মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘দু’মিনিটে শিকার উৎসব বন্ধ করতে পারতেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের কথা ভেবে তা করা হয়নি।’’

মানেকার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে গিয়েছিল তরজা। মানেকা অভিযোগ করেন ‘‘প্রতি বছর লালগড়ের আশেপাশে তথাকথিত আদিবাসীরা হাজারো পশুহত্যা করেন। নিজেদের জন্য করেন না। করেন চোরাচালানকারীদের জন্য।” পাল্টা মমতা বন্দোপাধ্যায়ও খোঁচা দিতে ছাড়েননি মানেকাকে। তিনি বলেন, “উনি কী করে জানলেন, আদিবাসীরা এটাকে মেরেছে? আদিবাসীদের অপমান করার ওঁর কোনও অধিকার নেই।’’ কিন্তু ঘটনার প্রায় দেড় মাস পরে বনকর্তার রিপোর্ট কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর শিকার উৎসবকে দেওয়া ক্লিনচিটকেই চ্যালেঞ্জ করল।

সেই সময় রাজ্য বন দফতর স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু হাঁসদা এবং বাদল হাঁসদার বিরুদ্ধে বাঘ মারার ঘটনায় এফআইআর করতে চায়। কিন্তু, জেলা পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। তার পরে নির্বাচনের ডামাডোলে চাপা পড়ে যায় বাঘ মৃত্যুর ঘটনা।

আরও পড়ুন: ‘বিজেপি করা! এ বার বোঝ’, লেখা টি-শার্টে, গাছে ঝুলছে দেহ

আরও পড়ুন: জ্বরে মৃত্যু, বাংলাতেও ছড়াচ্ছে নিপা-ভীতি

সূত্রের খবর, গত সোমবার জমা দেওয়া রিপোর্টে জেলা প্রশাসন এবং বন দফতরের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবের অভিযোগ করা হয়েছে। সেখানে নিজের দফতরকেও ক্নিনচিট দেননি মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের তরফেও যে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এবং অনেক ক্ষেত্রে গাফিলতি ছিল, তা-ও বলা হয়েছে এই রিপোর্টে। স্থানীয় বন সুরক্ষা কমিটির ভূমিকাতেও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যদের কাছে বাঘের আনাগোনা এবং স্থানীয়দের শিকারের পরিকল্পনার কোনও খবর ছিল না।

সূত্রের খবর, গাফিলতির কথা স্বীকার করেও এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই সময়ে লালগড়ের জঙ্গলে শিকার উৎসব বন্ধ করতে পারলে বাঘটিকে বাঁচানো সম্ভব হত। বনকর্তা তাঁর জমা দেওয়া রিপোর্টে জানিয়েছেন, বাঘের ময়নাতদন্তে প্রমাণিত যে, বিষক্রিয়া বা সংক্রমণ থেকে তার মৃত্যু হয়নি। বাঘ মারা গিয়েছে বল্লমে এবং ভারী কিছুর আঘাতে। বাঘের কাছে যে আধখাওয়া শুয়োরের দেহ পাওয়া গিয়েছিল তাতেও কোনও বিষক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রধান সচিব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কলকাতার বাইরে থাকায় এখনও সেই রিপোর্ট হাতে পাননি। তাই গোটা বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE