অয়ন শীলের বিরুদ্ধে নয়া অভিযোগ। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলের বিরুদ্ধে এ বার নতুন অভিযোগ উঠে এল। তাঁর বিরুদ্ধে আগেই অবৈধ উপায়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছিল। এ বার বৈধ উপায়ে চাকরি পাওয়া ব্যক্তির কাছ থেকেও টাকা চাওয়া এবং টাকা না পেয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার অভিযোগ উঠল ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া অয়নের বিরুদ্ধে। যদিও বর্তমানে ইডি হেফাজতে থাকায় এই বিষয়ে অয়নের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
চুঁচুড়া ষণ্ডেশ্বরতলার বাসিন্দা চয়নিকা আঢ্য পুরসভার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, অয়নকে টাকা না দিতে পারায় সেই চাকরি আর করতে পারেননি তিনি। ২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় পুরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন চয়নিকা। জাতীয় স্তরের যোগাসন চ্যাম্পিয়ন, ভাল অ্যাথলিট বলে পরিচিত চয়নিকা খেলোয়াড় কোটায় ওই চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ইন্টারভিউয়ে ডাক পেয়েছিলেন। চয়নিকার দাবি মোতাবেক, ইন্টারভিউয়ের পর চাকরিও হয়ে যায় তাঁর। ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর তাঁকে জয়েনিং লেটার দেওয়া হয় পুরসভার তরফে। চয়নিকার বয়ান অনুযায়ী, এর পরেই শুরু হয় অন্য ‘নাটক’।
চয়নিকা জানান, এক পুলিশকর্মী এক দিন তাঁর বাড়িতে গিয়ে জানান, অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করতে হবে। চাকরির ব্যাপারে কথা আছে। চয়নিকা তাঁর বাবাকে নিয়ে চুঁচুড়া জগুদাসপাড়ায় অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করেন। অয়ন তাঁদের বলেন, “চাকরির জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে।” চয়নিকা তখন জানান, তিনি নিজের যোগ্যতায় এই চাকরি পেয়েছেন। প্রশ্ন তোলেন যে, অয়নের ক্যান্ডিডেট যখন তিনি নন, তা হলে কেন তাঁকে টাকা দিতে হবে? আর অত টাকা তার কাছে নেই বলেও জানান চয়নিকা। তার পরেও অবশ্য হাল ছাড়েননি অয়ন। চয়নিকার কথায়, “সে দিন ফিরে আসার পর অয়ন শীলের লোক আমার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করে এবং সল্টলেকের অফিসে যেতে বলে। সল্টলেকের অফিসে বাবাকে নিয়েও গিয়েছিলাম। কিন্তু বেশ কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা না পেয়ে ফিরে আসি। পরে জানতে পারি প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে অয়নের বিরুদ্ধে।”
চয়নিকা জানান, সেই সময় বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে সমস্যা চলছিল তাঁর। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা, তাই একটা চাকরির খুব প্রয়োজন ছিল। হাল না ছেড়ে টিটাগড় পুরসভায় গিয়ে কথা বলেন চেয়ারম্যানের সঙ্গে। গড়িমসির পর তাঁকে কাজে যোগ দিতে বলা হয়। বেতনের জন্য স্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে জিরো ব্যালান্সে অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে এটিএম কার্ড সব করে দেওয়া হয়েছিল। পুরসভার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসাবে ছ’দিন কাজও করেন তিনি। তার পর হঠাৎই তাঁকে বার করে দেওয়া হয় পুরসভা থেকে। চয়নিকা এ-ও জানান যে, নিয়োগ তালিকায় তাঁর ২২০ নম্বরে নাম ছিল। অভিযোগ, রাতারাতি সেই তালিকা পরিবর্তন করে যাঁদের নাম ছিল না, তাঁদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। চয়নিকার সন্দেহ, যাঁরা টাকা দিতে পেরেছিলেন, তাঁদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। আর চয়নিকার মতো যাঁরা নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
অয়নের সংস্থা পানিহাটি-সহ বেশ কয়েকটি পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার দায়িত্বে ছিল। ইতিমধ্যেই তার অফিস থেকে ইডি আধিকারিকরা বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) উদ্ধার করেছেন। অয়নের বিরুদ্ধে স্কুল, পুরসভা-সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নিয়োগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা ও বহু মানুষকে প্রতারিত করার অভিযোগ এসেছে। আদালতেও একই দাবি করেছে তদন্তকারী সংস্থাটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy