অভিযুক্ত জ্যোতিষী নিত্যানন্দ দাস।
ফেডেড জিন্স। সাদা হাফ শার্ট। কপালে জ্বলজ্বলে লাল তিলকের নীচে কুচকুচে কালো রোদ চশমা।
নিখুঁত কামানো দাড়িতে স্পষ্ট প্রত্যয়। চোখে মুখে কোনও জড়তা নেই। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ভ্যান থেকে নামার পরে আশপাশের লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়ার ভঙ্গি বলছে, কিছুই হয়নি তো!
তারপর গটগট করে আদালতের দিকে হাঁটা লাগাল সে। নিত্যানন্দ দাসকে দেখে বোঝার উপায় ছিল না তিন মহিলা খুনের মামলা শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, এবং অভিযোগের আঙুল তার দিকেই উঁচিয়ে আছে।
প্রতি বার শুনানিতে ধোপদুরস্ত পোশাকে এজলাসে হাজির হতে দেখা গিয়েছে তাকে। হাজতে ঢোকার মুখে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন তার মা অঞ্জলি দাস। মায়ের কাছ থেকে প্রসাদী সিঁদুর কপালে লাগিয়ে নেয় নিত্যানন্দ। তার পর হাজতের গারদে দাঁড়িয়ে বছর দশেকের ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে কিছুক্ষণ আদরও করে সে। নিত্যানন্দকে এক ঝলক দেখতে আদালতের বাইরে তখন হাজার জনতা। পুলিশ ঝুঁকি নেয়নি। টেনে হাজতের ভিতরে নিয়ে চলে যায় তাকে। দুপুর ২টো নাগাদ নিত্যানন্দকে হাজত থেকে এজলাসে নিয়ে আসা হয়। আদালতের বারান্দা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা দেখে একবারই রোদ চশমা খুলেছিল নিত্যানন্দ। চোখেমুখে নিজেকে সপ্রতিভ দেখানোর আপ্রাণ ‘লড়াই’ও একইসঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছিল সে। বোঝা যাচ্ছিল, যথেষ্ট চাপে রয়েছে সে। শরীরী ভাষায় ছিল উদ্বেগ চাপা দেওয়ার চেষ্টাও। কখনও জামার কলার ঠিক করছে। কখনও পরিচিত আইনজীবীদের তাকিয়ে হেসেছে সে। একবার আদালতের ছাদের কড়ি-বড়গার দিকে উদাস হয়ে তাকিয়েও ছিল বছর আটত্রিশের নিত্যানন্দ।
বিচারক এজলাস থেকে নেমে যেতে নিজের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের দু’ হাত জড়িয়ে ‘‘কিছু একটা করুন প্লিজ’’ বলতেও শোনা গিয়েছে তাকে। তখনই বোঝা যাচ্ছিল এ বার ভাঙছে সে। রায় শুনে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে চিৎকার করে সে বলে, ‘‘এটা ঠিক হল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy