ফাইল চিত্র।
আর্সেনিক আর ফ্লুয়োরাইডের দূষণ এত দিন মাথাব্যথার কারণ ছিল মূলত জেলাগুলিতেই। কিন্তু এই বিপদ যে কলকাতার ঘাড়ে শ্বাস ফেলছে, সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ্যা বিভাগের এক দল গবেষকের গবেষণায় সেটা ধরা পড়েছে। কলকাতার উপকণ্ঠে, রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের ভূগর্ভস্থ জল পরীক্ষা করে তাঁরা দেখেছেন, তাতে আর্সেনিক এবং ফ্লুয়োরাইড রয়েছে সহনমাত্রার উপরে। ‘গ্রাউন্ড ওয়াটার ফর সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট’ নামে একটি বিজ্ঞান পত্রিকায় তাঁদের সেই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ভূগর্ভস্থ জল পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের সাতটি জেলায় ফ্লুয়োরাইডে প্রকোপ রয়েছে আর আর্সেনিকের বিষ রয়েছে আটটি জেলায়। আর্সেনিকের প্রকোপ বেশি মূলত গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে। ফ্লুয়োরাইড রয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের মালভূমি এলাকাতেও। তবে কলকাতার দু’প্রান্তে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রান্তিক এলাকাগুলিতে এই বিপদ আগে থেকেই আছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ়ের অধ্যাপক তড়িৎ রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে অয়ন দে, দীপাঞ্জন মৃধা, মধুরিমা জোয়ারদার, অন্তরা দাস ও নীলাঞ্জনা রায়চৌধুরী রাজপুর-সোনারপুরের জল নিয়ে যে-গবেষণা করেছেন, তাতে মূলত দু’টি বিপদের কথা উঠে এসেছে। প্রথমত, ভূগর্ভের জল যদি অপরিশোধিত অবস্থায় পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তা হলে আর্সেনিক ও ফ্লুয়োরাইডের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক মানবদেহে ঢুকবে। দ্বিতীয়ত, ওই গবেষকেরা আরও যে-দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, তা হল, খাদ্যশৃঙ্খলে আর্সেনিকের ঢুকে পড়ার আশঙ্কা। ওই জল ব্যবহার করে যদি শস্য এবং আনাজ ফলানো হয়, তা হলে বিষাক্ত রাসায়নিক ঢুকবে সেই গাছ এবং ফলে। সে-ক্ষেত্রে ওই নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে থাকা মানুষজনের শরীরেও বিষাক্ত রাসায়নিক ঢুকতে পারে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার অদূরে ওই পুর এলাকার ৩৫টি ওয়ার্ড থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তার মধ্যে দু’টি ওয়ার্ডের পানীয় জলে মাত্রাতিরিক্ত বিষাক্ত রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে বলে জানান গবেষকেরা। তাঁদের হিসেব, ওই এলাকার প্রতি লিটার ভূগর্ভস্থ জলে ১.৫১ মিলিগ্রাম থেকে ২.৯ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ফ্লুয়োরাইড আছে। আর প্রতি লিটার জলে আর্সেনিক রয়েছে ১০.১ মিলিগ্রাম থেকে ২১৩ মিলিগ্রাম পর্যন্ত।
এই জোড়া সমস্যার দাওয়াই বাতলে গবেষকেরা বলেছেন, বিষাক্ত রাসায়নিকের থেকে বাঁচাতে নদীর জল পরিস্রুত করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পৌঁছে দেওয়া দরকার। তাই জল পরিশোধন কেন্দ্র বসানো প্রয়োজন। সেচের জলের উপরে নজরদারিও দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy