দাসপুরে সোনা লুঠের মামলায় তিনি অভিযুক্ত। আলিপুরদুয়ার জেলার স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ বা এসওজি-র অফিসার প্রদীপ রথের বিরুদ্ধে সিআইডি এ বার আদালতে অভিযোগ আনল, তিনি ওই জেলারই পুলিশ সুপারের ই-মেল আইডি-র মাধ্যমে সিআইডি-র এক তদন্তকারী অফিসার এবং তিন সাক্ষীর ফোনের ‘কল ডিটেলস রেকর্ড’ (সিডিআর) বা তথ্য চুরি করে পাচার করেছেন।
এই অভিযোগের পরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে পুলিশের অন্দরেও। রাজ্য পুলিশের কর্তাদের একাংশ বলছেন, এই ঘটনার পরে তো কারও সিডিআর-ই নিরাপদ নয়! পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের ঘনিষ্ঠ সাব-ইনস্পেক্টর প্রদীপকে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সোনা প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পরে তিনি জামিন পান এবং আলিপুরদুয়ারের এসওজি-তে যোগ দেন। শুক্রবার গভীর রাতে তাঁকে ফের গ্রেফতার করে সিআইডি। শনিবার আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ জানানো হয়।
আদালতে সিআইডি জানিয়েছে, রথ যে সোনা লুঠ মামলায় সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসার এবং তিন সাক্ষীর ফোনের তথ্য চুরি করেছেন, ফরেন্সিক রিপোর্টে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই মামলায় ভারতীর নামও উঠেছে। সিআইডি-কর্তাদের দাবি, চুরি করা সিডিআরের ভিত্তিতে একটি ইংরেজি সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। আর সেই খবরের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দেন ভারতী। সেই সুবাদেই প্রদীপের সিডিআর চুরির সঙ্গে ভারতীর যোগসাজশ স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। ভারতীর নির্দেশেই রথ তথ্য চুরি করেন বলে সিআইডি-কর্তাদের অভিযোগ।
কী ভাবে ফোনের তথ্য হাতালেন রথ? রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, গোয়েন্দা দফতর-সহ সব তদন্তকারী সংস্থাতেই একটি পৃথক বিভাগ থাকে। দফতরের সর্বময় কর্তার ই-মেল আইডি সেই বিভাগের অফিসারদের দেওয়া থাকে। সেই অফিসারেরা বিভিন্ন মামলায় তদন্তের প্রয়োজনে ওই আইডি ব্যবহার করে সার্ভিস প্রোভাইডার (মোবাইল সংস্থার)-এর কাছ থেকে অভিযুক্তদের ফোনের ‘সিডিআর’ সংগ্রহ করেন। সততার শপথ ভাঙলে কোনও অফিসার তাঁর সর্বময় কর্তার ই-মেল আইডি ব্যবহার করে যে-কারও মোবাইলের সিডিআর হাতিয়ে নিতে পারেন। পুলিশ মহলেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে মানুষের গোপনীয়তা রক্ষিত হবে কী ভাবে?
রাজ্য পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, আলিপুরদুয়ারে ঠিক কী ঘটেছে, এসওজি-র এক অফিসার কেন এসপি-র মেল আইডি-র অপব্যবহার করে তথ্য চুরি করলেন, তা বিশেষ ভাবে খতিয়ে দেখা দরকার। ‘‘রথকে জেরা করা হচ্ছে। কার নির্দেশে তিনি কী ভাবে ওই কাজ করেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের কর্তাদের কাছেও,’’ বললেন সিআইডি-র এক কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy