Advertisement
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্মৃতি ইরানি আসেননি ভয়ে, কটাক্ষ অনুব্রতের

সিউড়িতে এ দিন সভা ছিল বিজেপি-র। সেখানে মেরেকেটে হাজার দশেক লোকের ভিড় হয়েছিল।

মেজাজে: বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র

মেজাজে: বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৩
Share: Save:

দুই শহরের মাঝের ফারাক মাত্র ৩৬ কিলোমিটার। কিন্তু, বুধবার সিউড়ি ও বোলপুরে, দুই যুযুধান রাজনৈতিক দলের জনসভা ঘিরে ভিড় ও উত্তেজনার যে ছবি দেখা গেল, তার তফাৎ যেন অনেক বেশি!

সিউড়িতে এ দিন সভা ছিল বিজেপি-র। সেখানে মেরেকেটে হাজার দশেক লোকের ভিড় হয়েছিল। তার উপরে মূল বক্তা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ না আসায় সভার মেজাজও তেমন হয়নি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরেও সভার মূল বক্তা না আসায় জেলা বিজেপি নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। বিজেপি কর্মীরাও দৃশ্যতই মুষড়ে পড়েছিলেন। অন্য দিকে, বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সভায় লোক ছিল তার কয়েক গুণ। এবং সেই সভায় এই ভিড়ের প্রসঙ্গ তুলেই বারবার এ রাজ্যে তাঁদের প্রধান প্রতিপক্ষকে খোঁচা দিলেন অনুব্রত। বললেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগঠন দেখে অমিত শাহ আগেই ‘পালিয়েছেন’। স্মৃতি ইরানিও আসার সাহস দেখালেন না!

মঙ্গলবারই জেলা তৃণমূল জানিয়েছিল, বিজেপি-র পাল্টা সভা বুধবারই হবে বোলপুরে। সেই সভায় ভিড় টানার জন্য অনেক শতাধিক বেসরকারি বাস ও ছোট গাড়িও তুলে নেওয়া হয়েছিল। এ দিন ডাকবাংলা মাঠের ভিতরে যত কর্মী-সমর্থক ছিলেন, বাইরে তার থেকেও বেশি ভিড় হয়েছিল। তার জেরে বোলপুর শহরে যানজটও হয়। সভামঞ্চ থেকেই অনুব্রত দাবি করেন, ‘‘আমরা তো সিউড়িতে অমিত শাহের সভায় বাধা দিইনি। তা হলে উনি কেন সভা করলেন না? আসলে উনি দেখলেন, তাঁর সভায় বীরভূম এবং ঝাড়খণ্ড মিলিয়ে ৫ থেকে ৬ হাজার লোক হবে। একই দিনে বোলপুরে আমাদের মিটিং আছে। সেখান দেড় লাখ থেকে দু’লাখ লোক হবে। সেই ভয়েই এলেন না।’’ স্মৃতি ইরানির প্রতিও তাঁর কটাক্ষ, ‘‘এই লোক দেখে কি আসতে পারেন? সভা করতে তাই উনিও আসেননি। ওদের রাহু-কেতু গ্রাস করেছে। যজ্ঞ করতে হবে।’’

অনুব্রত মঞ্চ থেকেই বিজেপি-র উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে দাবি করেন, বীরভূমে লোকসভার দু’টি আসন রয়েছে। একটিতে তিন লক্ষ এবং অন্যটিতে ৪ লক্ষ ভোটে হারাবেন। ‘‘বিজেপির কোনও লিডারের হিম্মত আছে ? চ্যালেঞ্জ করবেন?’’—বলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি। তাঁর আরও দাবি, নদিয়া জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন। সেখানেও দু’টি ‘সিট’ জিতবেন।

ইদানীং প্রায় সব সভাতেই উন্নয়নের আশ্বাস ফেরি করছেন অনুব্রত। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বলেছেন, ‘‘২০১৩ সালে আমরা সমস্ত কাঁচা রাস্তা পাকা করে দেব, সেই দাবি নিয়ে মানুষের কাছে ভোট চেয়েছিলাম। আজ কেউ বলতে পারবেন একটা রাস্তাও কাঁচা আছে। আমরা বলি উন্নয়ন বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে। কেউ বলতে পারবেন উন্নয়ন হয়নি।’’ একই সঙ্গে দলীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের প্রতি হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, ‘‘মানুষকে চোখ রাঙাবেন না। কেউ পঞ্চায়েত অফিসে গেলে তাঁকে বসিয়ে এক কাপ চা খাওয়াবেন। দুর্ব্যবহার করবেন না।’’ জেলায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে ফের জেলে পুরে দেওয়ার সেই পুরনো হুমকি শোনা গিয়েছে জেলা সভাপতির মুখে। অনুব্রত বলেন, ‘‘কোন মেম্বার যদি ভাবেন, বাড়ির টাকা নেব, তা হলে কিন্তু ছেড়ে কথা বলব না। জেলে পাঠিয়ে দেব। কেউ বাড়ির জন্য টাকা চাইলে সরাসরি আমাকে ফোন করবেন অথবা পার্টি অফিসে জানাবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Meeting TMC Anubrata Mondal BJP Smriti Irani
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE