Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

মাঠে নেমেই হুমকি অনুব্রতর

বিরোধীদের দাবি, অনুব্রতর সভা মানেই কুকথার ফুলঝুরি। কখনও গুড় বাতাসা, কখনও চড়াম-চড়াম, কখনও পাঁচনের নিদানও দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে।

লাভপুরে তৃণমূলের জনসভায় জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: কল্যাণ আচার্য

লাভপুরে তৃণমূলের জনসভায় জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: কল্যাণ আচার্য

অর্ঘ্য ঘোষ
লাভপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১৪
Share: Save:

লোকসভা ভোটের পর থেকেই কার্যত নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রবিবার ফের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রশাসন যা পারবে না তা তিনি করে দেখাবেন বলে হুমকি দিলেন বিজেপিকে। প্রসঙ্গ ছিল বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াই খুনের পর থেকে জেলাজুড়ে উত্তেজনা অবরোধের ঘটনা নিয়ে। লাভপুরে পঞ্চায়েত সমিতির যে মাঠে কিছুদিন আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সভা করেছিলেন সেই মাঠেই এ দিন সভা করলেন অনুব্রত। আর সেই সভাতেই বিজেপিকে তুলোধনা করলেন তিনি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি পথ অবরোধ করলে প্রশাসন মোকাবিলা করতে না পারলে আমরাই এবার গরু সাটানোর মতো সাটাব। কালীপুজোর পর থেকে শুরু হবে ওই সাটানো প্রক্রিয়া।’’

বিরোধীদের দাবি, অনুব্রতর সভা মানেই কুকথার ফুলঝুরি। কখনও গুড় বাতাসা, কখনও চড়াম-চড়াম, কখনও পাঁচনের নিদানও দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। কর্মীদের পুলিশ প্রশাসনের উপরে বোম মারারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। প্রশাসন না পারলে তিনিই যে পারবেন বিরোধীদের পিছু হঠিয়ে তৃণমূলের গড় সামলাতে তা আগেও বেশ কয়েকবার বলেছেন অনুব্রত। এবার যোগ হল গরু সাটানোর নিদানও। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতাদের কাছে এর বেশি আর কিই বা আশা করা যায়। তবে গরু খেপে গেলে সিং-এর গুঁতো দিতে ছাড়ে না এটাও মনে রাখবেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি।’’

সম্প্রতি লাভপুরের মীরবাঁধ গ্রামে এক বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় শাসক দলের দিকে আঙুল উঠেছিল। এরপরেই বিজেপি কর্মীরা এককাট্টা হয়ে ওঠেন। লাভপুরে বেশ বড় সমাবেশ করে বিজেপি। এরপর নানুরের রামকৃষ্ণপুরে স্বরূপ গড়াই খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলীয় কর্মী সমর্থকদের আন্দোলনের চাপে নাজেহাল হয়ে পড়ে পুলিশ প্রশাসন। প্রতিদিন বিজেপির রাজ্য নেতারা জেলায় আসতে থাকেন। জেলার নেতারাও এলাকায় কর্মীদের সংগঠিত করতে উঠেপড়ে লাগেন। বিজেপির সভা সমাবেশে সমাগম বাড়তে থাকে। অন্যদিকে, কাটমানি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে জেলার তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা কোনঠাসা হয়ে পড়েন। মনোবলও হারিয়ে ফেলেন অনেকে। আন্দোলনের রাশ বিজেপির হাতে চলে যাচ্ছে দেখে শেষ পর্যন্ত মাঠে নামতে হয় অনুব্রতকে।

লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে সভা সমাবেশে বিশেষ একটা দেখা যায়নি তাঁকে। দলীয় সূত্রে অবশ্য শারীরিক অসুস্থতাকেই কারণ হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু বিরোধীরা বলছেন অন্যকথা। বিশ্বজিৎবাবুদের দাবি, ‘‘নির্বাচনের পর অনুব্রত বলেছিলেন, তৃণমূল ৩৫টা আসন না পেলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। সেই হিসেব মেলেনি। পাশাপাশি খারাপ ফল করার জন্য নদিয়ার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে তিনি অন্তরালে।’’

কয়েকদিন আগে লাভপুরের পঞ্চায়েত সমিতির মাঠে বিজেপির জনসভায় লোক হয়েছিল প্রায় ৮ হাজার। এ দিন তৃণমূলের সভায় জমায়েতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। এদিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে হাজির ছিলেন সাংসদ অসিত মাল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী প্রমুখ।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Anubrata Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy