এখন থেকেই লোকসভা নির্বাচনের প্রচার চান নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। — ফাইল চিত্র।
নতুন বছরের শুরু থেকেই নতুন নতুন কর্মসূচি নিতে চায় রাজ্য বিজেপি। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার অমিত শাহ এবং জেপি নড্ডার সফরের পর থেকেই সক্রিয় রাজ্য নেতৃত্ব। বুধবারই রাজ্য কার্যকারিণীর বৈঠক করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর সেখানেই রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে জানিয়ে দেন, শুধু বিজেপি নয়, দলের সব মোর্চা এবং শাখার নেতাদেরও ২ জানুয়ারি থেকে নেমে পড়তে হবে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে। কোনও ছুটি মিলবে না ভোটগণনার আগে। এমনটাই চান শাহ তো বটেই, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সেই নির্দেশ যাতে নেতা-কর্মীরা পালন করেন তার জন্য একের পর এক কর্মসূচি নিতে চলেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দলের সব মোর্চাও যাতে সেই কর্মসূচি সফল করতে জোটবদ্ধ হয় তার জন্য আগামী বুধবার একটি বৈঠক হওয়ার কথা কলকাতায়। সব মোর্চা নেতৃত্বকে নিয়ে আলোচনায় বসার কর্মসূচির সাংগঠনিক নাম দেওয়া হয়েছে— ‘সংযুক্ত মোর্চা বৈঠক’। যদিও দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এটা একেবারেই সাংগঠনিক বৈঠক। নিয়মিত ভাবেই সব মোর্চাকে নিয়ে বসা হয়। আর লোকসভা নির্বাচনের আগে তো এমন বৈঠক হতেই থাকবে।’’
বিজেপির সংগঠনে মোট সাতটি মোর্চা রয়েছে। মূলত যুব এবং মহিলা মোর্চাকে বিভিন্ন আন্দোলনে দেখা গেলেও বিজেপিতে রয়েছে তফসিলি জাতি, তফসিলি জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি এবং সংখ্যালঘু মোর্চা। এ ছাড়াও কৃষকদের নিয়ে কিসান মোর্চা রয়েছে। প্রসঙ্গত, বিজেপির দলীয় কোনও ছাত্র ও শ্রমিক মোর্চা নেই। সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন ‘অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ’ এবং শ্রমিক সংগঠন ‘ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ’ থাকায় এই দুই ক্ষেত্রের কোনও মোর্চা নেই বিজেপির। আগামী বুধবার দলের সাত মোর্চার রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়েই বৈঠকে বসতে চলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। শুধু রাজ্যের নেতারাই নন, গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে প্রতিটি মোর্চার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যের পর্যবেক্ষকেরাও ওই বৈঠকে হাজির থাকবেন।
জাতীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষ কিংবা আইসিসিআরের সভাগারে হতে চলা ওই বৈঠকে কয়েকটি কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকেই রাজ্যে রামমন্দির নিয়ে প্রচার চালাতে চায় বিজেপি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার-পুস্তিকা পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরে রামমন্দির উদ্বোধন হয়ে গেলে বাংলার মানুষকে অযোধ্যায় পাঠানোর দায়িত্বও নিতে হবে দলের নেতা-কর্মীদের। এই সব কর্মসূচিতে যাতে সব মোর্চা একসঙ্গে কাজ করে সেই লক্ষ্যেই বুধবারের বৈঠক বলে জানা গিয়েছে।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে যুব মোর্চার আবার আলাদা কর্মসূচি রয়েছে। গোটা রাজ্যের সব গ্রামে যেতে হবে মোর্চাকে। নরেন্দ্র মোদীকে তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী করার লক্ষ্যে বিজেপি বড় ভরসা করতে চায় কেন্দ্রের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের উপরে। সেই সব নিয়েই হবে যুব মোর্চার প্রচার। এই দুই মাসের মধ্যে গোটা দেশে মোট পাঁচ হাজার যুব সমাবেশ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। বাংলায় এমন সভা কমপক্ষে ১০টি হবে বলে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডার নির্দেশ, ওই সভাগুলিতে কমপক্ষে এক হাজার নতুন ভোটারকে নিয়ে আসতে হবে। এই কর্মসূচি যুব মোর্চার উদ্যোগে হলেও বিজেপি চায় অন্য মোর্চাগুলিও এই কর্মসূচিতে অংশ নিক। প্রথম বারের ভোটারদের নিয়ে আসার জন্য সব মোর্চাকে বুধবারের বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো কেন্দ্রীয় সরকারও ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’ নামে একটি কর্মসূচি নিয়েছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে সরকারি উদ্যোগে এই কর্মসূচি হলেও বাংলায় দলের তরফেই করার পরিকল্পনা রাজ্য বিজেপির। মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে, কোনও প্রকল্পের সুবিধা নিতে কী কী করতে হবে তা জানাতে বিজেপি কর্মীরা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যাবেন। এই কর্মসূচি ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চালানোর কথা। রাজ্য বিজেপি ঠিক করেছে সব মোর্চাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প সভা’ করবে। সেই সঙ্গে ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনের দিনে রাজ্যের সব মন্দিরে উৎসব পালনের যে পরিকল্পনা তাতেও সব মোর্চাকে ব্যবহার করতে চায় বিজেপি। এ সব নিয়েও আলোচনা হতে পারে বুধবারের বৈঠকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy