Amid souring ties with India, Maldives President Mohamed Muizzu likely to visit China dgtl
India-Maldives Relationship
ভারতের শত্রুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পুরনো বন্ধুর! চিন সফরেও যাচ্ছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট
মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ সোলি ভারতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার যে নীতি নিয়ে চলতেন, সেই ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোটের ময়দানে নেমেছিলেন মুইজ়ু।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
ভারতের উদ্বেগ এবং চিন্তা বাড়িয়ে এ বার চিন সফরে যেতে চলেছেন মলদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ়ু। বৈঠকের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত না-হলেও, শোনা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই বেজিংয়ে গিয়ে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট।
০২১৯
মুইজ়ুর চিন সফর অন্য একটা দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। গণতন্ত্রের রাস্তা ধরে পথচলা শুরু করার পর মলদ্বীপের সব প্রেসিডেন্টেরই প্রথম গন্তব্য হয়েছে ভারত। এমনকি ভারত-বিরোধী বলে পরিচিত প্রেসিডেন্টরাও শপথ নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে ভারতেই এসেছেন।
০৩১৯
মুইজ়ু তাঁর বিদেশ সফর শুরু করেছিলেন তুরস্কে গিয়ে। ভারতে আসার আগেই এ বার চিন সফরে যেতে চলেছেন তিনি।
০৪১৯
মলদ্বীপের নয়া প্রেসিডেন্টের এই চিন সফরকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছে দিল্লি। সীমান্তে সংঘাত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেজিংয়ের প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা— সব কিছুর নিরিখেই ভারত এবং চিনের সম্পর্ক একাধিক উত্থানপতনের মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছে।
০৫১৯
এই আবহে মলদ্বীপের চিন-ঘনিষ্ঠতা অস্বস্তি বাড়িয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের। এমনিতেই মুইজ়ু ঘরোয়া রাজনীতিতে ‘ভারত-বিরোধী’ এবং ‘চিন-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত।
০৬১৯
মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ সোলি ভারতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার যে নীতি নিয়ে চলতেন, সেই ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোটের ময়দানে নেমেছিলেন মুইজ়ু।
০৭১৯
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই ভারতকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মুইজ়ু বলেন, ‘‘আমাদের দেশের মাটি থেকে সমস্ত বিদেশি সেনাকে আমারা ফেরত পাঠাব।’’
০৮১৯
এ ক্ষেত্রে মুইজ়ু নাম না-করলেও স্পষ্ট ভাবেই ভারতকে নিশানা করেন। কারণ, ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এবং শিল্পক্ষেত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় সেনা।
০৯১৯
পরে কূটনৈতিক স্তরেও ভারতকে সেনা সরাবার বার্তা দেয় মলদ্বীপ। দ্বীপরাষ্ট্রটির ঘরোয়া রাজনীতিতেও মুইজ়ুর দল প্রোগ্রেসিভ পার্টি অফ মলদ্বীপস (পিপিএম) এই বলে প্রচার চালায় যে, দেশের সার্বভৌম ক্ষমতাকে খর্ব করতেই সেনা রেখে দিয়েছে ভারত।
১০১৯
যদিও বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, রাজনৈতিক কারণে তীব্র জাতীয়তাবাদী প্রচার চালাচ্ছেন মুইজ়ু। তাদের বক্তব্য, ভারতের মাত্র ৭৭ জন ভারতীয় সেনা কখনওই মলদ্বীপের নিরাপত্তার জন্য ‘বিপজ্জনক’ হতে পারতেন না। উল্টে দূরবর্তী দ্বীপগুলিতে ওষুধ এবং ত্রাণ পাঠাত ভারতীয় বায়ুসেনার হেলিকপ্টারগুলিই।
১১১৯
ভারতের ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্বের যুক্তি খাড়া করলেও মুইজ়ুর প্রশাসন কিন্তু সে দেশে চিনের একটি নজরদার জাহাজকে প্রবেশাধিকার দিয়েছে। সূত্রের খবর, কলম্বো বিমানবন্দরকে পোতাশ্রয় হিসাবে ব্যবহার করতে না-পেরে মলদ্বীপের কোনও বন্দরে ভিড়তে চলেছে সেটি।
১২১৯
মুইজ়ুর এই ‘ইন্ডিয়া আউট’ নীতিকে মলদ্বীপের কূটনৈতিক অবস্থানে বড়সড় পরিবর্তনের সূচক বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ভারত-ঘনিষ্ঠতা এড়িয়ে সম্প্রতি নতুন বন্ধু খোঁজার চেষ্টা করছে মলদ্বীপ।
১৩১৯
প্রথম বন্ধু হিসাবেই যে দেশকে মুইজ়ু বেছে নিয়েছেন, সেই তুরস্কের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুব একটা ‘মধুর’ নয়। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা (৩৭০ ধারা) তুলে দেওয়া নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছিল তুরস্ক।
১৪১৯
তা ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও ক্রমশ প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা করছে তারা। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা এবং মলদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী। দীর্ঘ দিন পরে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সরাসরি উড়ান পরিষেবাও চালু করেছে আঙ্কারা।
১৫১৯
কিছু দিন আগেই ভারতের সঙ্গে চার বছরের আগের পুরনো জল জরিপ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি বাতিল করেছে মলদ্বীপ।
১৬১৯
আর এক বন্ধু দেশ হিসাবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে বেছে নিয়েছে মলদ্বীপ। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশের সঙ্গে ভারতের নিবিড় সম্পর্ক থাকলেও মনে করা হচ্ছে, পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে প্রভাব বৃদ্ধি করতেই মলদ্বীপের এই সক্রিয়তা।
১৭১৯
মালাবার উপকূলের অদূরে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপ ভারতের কাছে রণকৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগরে শান্তি এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে মলদ্বীপের সঙ্গে মোটের উপর সুসম্পর্ক রাখা প্রয়োজন নয়াদিল্লির।
১৮১৯
আবার পর্যটন, পরিকাঠামো-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ভারতের মুখাপেক্ষী মলদ্বীপও। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক না-রাখলে ভারত মহাসাগরে বিশেষ স্বার্থ রয়েছে, এমন একাধিক দেশের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করতে হবে মলদ্বীপকে।